যে মুক্তচিন্তার অধিকারী, দেশপ্রেমিক, স্বপ্নের ফেরিওয়ালা ও বিপ্লবী জানান দিয়েছিলেন যে দেহ অতি পবিত্র এক জিনিস এবং এর চাহিদাগুলো কবিতায় আনার অতি উপযুক্ত, সেই কবি ওয়াল্ট হুইটম্যান এক সমতার রাজ্যে বাস করেন; মুদি দোকানী থেকে রাষ্ট্রপতি সকলেই তাঁর ভক্ত। 'লিভস অফ গ্রাস' তাঁর শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি, যা কিনা তাঁর যুগে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল। কিন্তু শতবর্ষ পরে আজও হুইটম্যানের শব্দেরা ভীষণভাবে সগৌরবে তাদের অস্তিত্ব জানান দেয়, যা নগরের গর্জনের মত, উত্তাল ঢেউয়ের বিস্ফোরণের মতই সজীব ও প্রমত্ত।
ওয়াল্ট হুইটম্যান তাঁর 'লিভস অফ গ্রাস'এ আহ্বান জানিয়েছিলেন,
'হে পথিক
তুমি যদি আমার পাশ দিয়ে চলে যাও, এবং আমার সাথে কথা বলার সাধ জাগে
তবে কেন তুমি আমার সাথে কথা বলো না?
এবং কেন আমি তোমার সাথে কথা কইব না?'
আমি কোনো সময়ই শুনি নাই তাঁর আহ্বান। বইয়ের প্রতি তীব্র আকর্ষণ স্বত্বেও হুইটম্যান এবং অন্য কবিদের লেখা কেবল বাধ্য হলেই পড়েছি। কলেজে ইংরেজিতে থার্ড ক্লাস পেয়ে পাশ করেছিলাম, পরে আর কোনোদিনই সাহিত্য ক্লাসের ছায়া মাড়াই নি। 'লিভস অফ গ্রাস' এখনো আমার বইয়ে তাকে অক্ষয় হয়ে অবস্থান করছে। সেই পঙক্তিগুলো, যা অনেক বছর আগে হোমওয়ার্ক করার জন্য দাগিয়ে ছিলাম, সেগুলো আমার কাছে দূর বাতিঘরের আলোকশিখার মত দীপ্যমান হয়ে ওঠে, এক অবাক উদাত্ত কণ্ঠ আমি দশদিক থেকে শুনেই পাই, যার উত্তর কোনোদিনই দেওয়া হয় নি।