দেশের সাতটি কেন্দ্রীয় কারাগারসহ ১০টিতে দাগি বন্দীদের দাপটে অসহায় সাধারণ বন্দীরা। এমনকি কারারক্ষীদের চেয়েও তাঁদের কর্তৃত্ব বেশি। টাকার বিনিময়ে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা, চিকিৎসার ব্যবস্থা—সবকিছুতেই থাকে তাঁদের হাত। সাধারণ বন্দীরা তাঁদের জুলুমের শিকার হচ্ছেন। কারা কর্মকর্তারা এসব জানলেও নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় থাকে। খোদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে রয়েছে এসব তথ্য।
বিভিন্ন কারাগারের ভেতরে অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা, মারধরসহ বিভিন্ন অভিযোগ শোনা যায় মাঝেমধ্যেই। কিছু কিছু ঘটনায় ভুক্তভোগী বন্দী ও স্বজনেরা কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। কারাগারফেরত কয়েকজন বলেছেন, কিছু দাগি অপরাধীর কর্মকাণ্ডে সংশোধনাগারে স্বস্তি পান না সাধারণ বন্দীরা। ‘রাখিব নিরাপদ দেখাব আলোর পথ’—এই স্লোগান অনেক বন্দীর কাছেই হয়ে ওঠে কথার কথা। কারাগারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, সীমিত জনবল ও অপর্যাপ্ত লজিস্টিক সাপোর্ট নিয়ে এসব বন্ধ করা খুব কঠিন।
জানতে চাইলে কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল সুজাউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিটি কারাগারে আমাদের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম চলছে। অনেক সময় আমরা নিজেদের মতো করে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। আবার অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের কেউ অভিযোগ করলে তাদের অভিযোগও আমলে নিয়ে তদন্ত করি।’
কারা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেশে ৬৮টি কারাগারের মধ্যে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার ও ৫৫টি জেলা কারাগার। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের অধীন ১৭টি। ধারণক্ষমতার কয়েক গুণ বন্দী, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, চিকিৎসক না থাকা, বিশুদ্ধ পানির সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা কারাগারগুলোতে কমবেশি রয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, গত মার্চে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে কয়েকজন জেলা প্রশাসক কারাগারের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন। তাঁদের উত্থাপিত বিষয়গুলো বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ২৯ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে পাঠানো হয়। অবশ্য এর আগেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কারাগার নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। ওই প্রতিবেদনের সূত্র ধরে আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে ২০টি কারাগারের বিভিন্ন সমস্যার চিত্র উঠে এসেছে।