সরকারিভাবে বাতিল ঘোষিত ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে বিভিন্ন কোম্পানি। চিকিৎসকেরা সেগুলো নিয়মিত ব্যবস্থাপত্রে লিখছেন; ফলে রোগীরাও কিনছেন। শুধু কর্তৃপক্ষ নীরব ভূমিকা পালন করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব ওষুধের কম্বিনেশন অপ্রয়োজনীয় বলেই বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু ছোট কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি কিছু বড় কোম্পানিও অনিয়মতান্ত্রিকভাবে এসব ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। মিটফোর্ড এলাকার অনেক দোকান থেকে এসব ওষুধ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এ বিষয়ে ভূমিকা পালন করছে না।
২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল ‘ঔষধ নিয়ন্ত্রণ কমিটি’র ২৫০তম সভায় ৮২টি ব্র্যান্ডের ওষুধের কম্বিনেশন বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সই করা ওই আদেশ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি সে বছরের ৭ মে প্রকাশিত হয়। বাতিল করা ওষুধের মধ্যে আছে চারটি অ্যান্টিবায়োটিক, তিনটি অ্যানেসথেটিক, পাঁচটি অ্যান্টিসাইকোটিক, ৬১টি ভিটামিন কম্বিনেশন এবং ৯টি ইলেকট্রোলাইট কম্বিনেশন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ওষুধ প্রযুক্তিবিদ বলেন, নিবন্ধন বাতিলের ক্ষেত্রে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর চতুরতার আশ্রয় নিয়েছে। কারণ, সেখানে শুধু বলা হয়, নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। কিন্তু নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি কোন দিন থেকে এসব ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত করা যাবে না। এভাবে কৌশলে কোম্পানিগুলোকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যাতে কাঁচামাল থেকে যাওয়ার অজুহাতে আরও দু-এক বছর তারা উৎপাদন চালিয়ে যেতে পারে।
এ প্রসঙ্গে কিছুদিন আগে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও মুখপাত্র মো. আইয়ুব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, যে ওষুধগুলো বাতিল করা হয়েছে, সেগুলো উৎপাদনের কোনো সুযোগ নেই। কেউ যদি করে থাকে সেটা অপরাধ। এ ক্ষেত্রে ধরা পড়লে সেই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই বক্তব্য নেওয়ার দু-তিন দিন পর আইয়ুব হোসেন অবসরে গেছেন।