রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন একমাত্র ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) একটি নতুন প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় সাড়ে ৩১ একর নিচু জমি নির্বাচন করা হয়েছে। অধিগ্রহণ করার সম্ভাবনায় প্রকল্পসংশ্লিষ্ট একটি মহল ওই নিচু জমি ভরাট করে ভিটার মূল্যহারে টাকা আদায় করার ছক কষছে। ফলে ওই জমি অধিগ্রহণ করা হলে পাশের জমির তুলনায় সরকারকে কয়েক গুণ টাকা বেশি গুনতে হবে। এভাবে জমি অধিগ্রহণ থেকেই প্রায় ১০০ কোটি টাকা হাতানোর নীলনকশা তৈরি করা হয়েছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের এক প্রতিবেদন থেকে এই নীলনকশার তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ডিসির পাঠানো প্রতিবেদন নোট আকারে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেকের নজরে আনে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ। এ বিষয়ে অভিমত ও নির্দেশনা চাওয়া হলে মন্ত্রী গত ২০ ফেব্রুয়ারি লিখিতভাবে জানান, ইডিসিএলের বর্তমান শিল্পটি প্রায় ৬০ বছরের পুরোনো ও ভঙ্গুর। জীর্ণ অবকাঠামোর কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে নতুন কারখানা স্থাপনে ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) প্রণয়ন ও যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে স্থান নির্বাচন করা হয়। সম্পূর্ণ অকৃষি জমি চিহ্নিত করে পিপিপি প্রস্তুত ও একনেকে উপস্থাপন করা হয়। প্রকল্প পরিচালক ২০২২ সালের ১৪ আগস্ট লিখিতভাবে জেলা প্রশাসককে ভূমি অধিগ্রহণে অনুরোধের পরেও ছয় মাস অতিক্রান্ত হতে চলেছে। এমনকি জমি অধিগ্রহণে ৪ ধারায় নোটিশ জারি করা হয়। মন্ত্রীর মতে, ৪ ধারায় নোটিশ জারির পর ভূমির শ্রেণি পরিবর্তনের সুযোগ নেই।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জেনেভায় অবস্থান করছেন। উচ্চ প্রযুক্তির অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে মন্ত্রী আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখানে দুর্নীতি করার সুযোগ নেই। কারণ, এই প্রকল্পের কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। শত কোটি টাকার লুটের অভিযোগ পদ্মা সেতুর মতো হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, সবকিছু হবে দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে।
জানা যায়, ইডিসিএলের নতুন ওষুধ উৎপাদন প্ল্যান্ট স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয় ২০২১ সালে। এটি প্রকল্প আকারে একনেকে উপস্থাপন করা হয় এবং ২০২২ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পটি অনুমোদন করেন।