প্রায় এক মাস ধরে ভোক্তাকে ভোগাচ্ছে পেঁয়াজের বাজার। নিত্যপণ্যটির দাম এ সময়ে বেড়ে হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এর মধ্যে আরেক দুশ্চিন্তার খবর দিচ্ছে মসলাজাতীয় পণ্য আদা। এটির দামও প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। চাহিদার তুলনায় আমদানি কম হওয়ায় আদার দাম বাড়ছে বলে দাবি পাইকার ও আমদানিকারকদের। তবে ভোক্তারা বলছেন, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে নানা অজুহাতে দাম বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। আমদানি খরচ ও মজুতের বিষয়ে ব্যবসায়ীদের তদারকি করলে দাম কমবে দরকারি এ পণ্যের।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে দেশি আদার পরিমাণ খুব কম। বেশিরভাগই আমদানি করা। সারাবছরই কমবেশি চায়না আদা পাওয়া যায়। রাজধানীতে এক মাস আগে এর কেজি ছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। গতকাল সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও হাতিরপুল কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা গেছে, দ্বিগুণের বেশি দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়। তাও কয়েক দোকান ঘুরলে দু-এক দোকানে পাওয়া যায়। চায়না আদার দাম বেশি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা এখন অপ্রচলিত বাজার থেকেও এ পণ্য আমদানি করছেন।
মিয়ানমার ও ভারত থেকে আসা বেশিরভাগ আদাকেই দেশি বলে বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা। নতুন করে এখন ভারত, ভুটান ও ভিয়েতনাম থেকেও আমদানি হচ্ছে। এগুলোকেও দেশি আদা বলে বিক্রি করছেন তাঁরা। মাসখানেক আগে এসব আদার কেজি বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। এক মাসের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। বাজারে এখন ইন্দোনেশিয়ার আদাও পাওয়া যাচ্ছে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা এটি বিক্রি করছেন ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যে দেখা গেছে, গত বছরের এ সময়ে দেশি আদার কেজি ছিল ১০০ থেকে ১৪০ টাকা; আর আমদানি করা আদার দাম ছিল ৮০ থেকে ১৩০ টাকা। টিসিবির তথ্যমতে, এক বছরে দেশি আদার দাম বেড়েছে ১৭৫ শতাংশ। আর আমদানি করা আদার বেড়েছে ২১০ শতাংশ। কারওয়ান বাজারের পাইকারি আদা-রসুন বিক্রেতা ও ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. জসিম সমকালকে বলেন, কয়েক দিন ধরে শ্যামবাজারে আদার সরবরাহ কমেছে। ১০০ কেজি কিনতে চাইলে আমদানিকারকরা দিচ্ছেন ৫০ কেজি। চায়না আদা পাওয়াই যায় না। পেলেও পাইকারিতেই প্রতি কেজির দাম ৫০০ টাকার কাছাকাছি পড়ে যায়। ভারতের কেরালার আদা না আসায় এখন ভুটান, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া থেকে আসছে। সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে।