অফিস আসার পথে তেজতরি বাজার সংলগ্ন পদচারী সেতুটি প্রায়দিনই পার হতে হয়। প্রাইভেট কার কণ্টকিত ঢাকা শহরে নিম্ন ও নিম্নমধ্যআয়ের মানুষের জন্য গুটিকয়েক বাসে মহিলাদের অফিসটাইমে জায়গা হয় না। নিত্য সেখানে নারী ও পুরুষ যাত্রীদের মধ্যে কটুকথা আর ঝগড়াঝাঁটির চাপান-উতোর চলে। সকালে একটু ঠাণ্ডা মাথায় অফিস যেতে তাই হাঁটা, রিকশা টেম্পোর পাঁচভাঙা দিয়ে গুলশান যাই।
সেতু পার হওয়ার সময় প্রায় প্রতিদিনই দেখি কারওয়ানবাজারের কুলিরা কী অসম্ভব কষ্টে তরকারির ঝাঁকা নিয়ে সিঁড়ি ভেঙে ফার্মগেটের পশ্চিমদিকটায় আসছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে আছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব। একবার এমন একজন বয়স্ক কুলি মনে হলো পড়েই যাবেন। বিশাল ঝাঁকাসহ উল্টে পড়লে কী করব সেটাই ভাবতে গিয়ে থেমে গিয়েছিলাম। উনি বুঝতে পেরে চোখ ইশারা করলেন চলে যেতে। তারপর দুঃসহ কষ্টে নিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে কোনোরকমে টাল সামলে ওপরের সিঁড়িতে একটা পা রাখলেন।
ঢাকা শহরের রাস্তাগুলো উঁচু দেওয়ালের সড়ক বিভাজকে ভরে যাচ্ছে। ছোট-বড় জেব্রাক্রসিং বন্ধ করে দেওয়ার হিড়িক পড়েছে আরো আগেই। তার বদলে উঠছে পদচারী সেতু। মহাখালি, মিরপুর রোড, সাতমসজিদ রোড যেখানে যাই একই অবস্থা। সাধারণ সক্ষম মানুষের বাইরে বাকিরা চলবে কী করে কর্তাদের তা মাথাতেই নেই। তাঁদের তো আর পায়ে হেঁটে রাস্তা পেরোতে হয় না।