বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যুগটা বিজ্ঞানের। বিজ্ঞানের অবদানেই আজ বিশ্ববাসী হরেকরকম সুবিধাদি ভোগ করার সুযোগ পেয়েছেন।
সেই সুবাদে বলা যায়, ঊনবিংশ থেকে একবিংশ শতাব্দীর মানুষ অনেকটাই ভাগ্যবান আগের শতাব্দীতে জন্মগ্রহণ করা মানুষের তুলনায়। ঊনবিংশ-একবিংশ শতাব্দীর মধ্যে জন্মগ্রহণ করতে পেরে আমরা গর্বিত তাই। কারণ এ সময়েই আমরা পেয়েছি রেডিও থেকে শুরু করে হালের ফোর-জি কিংবা ফাইভ-জি মোবাইল ফোন পর্যন্ত। বিজ্ঞান এবং বৈজ্ঞানিকের সমন্বয়ে আমরা যা পেয়েছি তা সত্যিই বিস্ময়কর বটে। আমাদের প্রাপ্তির ছোট্র উদাহরণটি হচ্ছে, বিজ্ঞানের কল্যাণেই মানুষ পৃথিবী ছেড়ে মহাশূন্যে পঁইপঁই করে ঘোরার সুযোগ পেয়েছে। এটি মানবজাতির জন্য বিশাল এক প্রাপ্তি। বিজ্ঞানের কাছে এ প্রাপ্তি অস্বীকারের কোন উপায় নেই।
শুধু তাই-ই নয়, বিজ্ঞান বা বৈজ্ঞানিকের কারণেই আজ আমরা দুর্যোগ আবহাওয়ার আগাম তথ্যাদি পেয়ে থাকি, যাতে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির কবল থেকে রেহাই পান আমজনতাসহ আমাদের সহায়-সম্বলও। পৃথিবীর আরেক প্রান্তে কী ঘটেছে নিমেষেই খবর পেয়ে যাচ্ছি আমরা। সবকিছু মিলিয়ে আমরা বলতে পারি, এসব শুধু বিজ্ঞানের কল্যাণেই সম্ভব হয়েছে; অন্যথায় আদিম যুগের মানুষের মতো কাটাতে হতো আমাদের। গুহায় বসবাস কিংবা লতাপাতা পরিধান করে কাঁচা খাবারাদি খেয়ে জীবন যাপন করতে হতো। সোজা কথা আমাদের সভ্য হতে শিখিয়েছে বিজ্ঞান।
প্রসঙ্গক্রমে বলতে হয়, বিজ্ঞানের আশীর্বাদে মানবজাতির গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে যেমন, তেমনি আয়ু হ্রাসও পাচ্ছে দ্রুত। বিজ্ঞানের অধিক হিতকর কাজে এক ধরনের অদৃশ্য দূষণের কবলে পড়ে বিভিন্ন ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে মানুষ মৃত্যুর পথে দ্রুত পা বাড়াচ্ছেন। যা খুব সহজেই টের পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ এ দূষণ হচ্ছে সম্পূর্ণ অদৃশ্য দূষণ। যে দূষণ খালিচোখে নজরেও পড়ছে না। এমনকি অনুভবও করা যাচ্ছে না, কারণ এটি থাকছে একেবারেই অদৃশ্য। এর প্রতিক্রিয়াও দীর্ঘমেয়াদি। আর সেই দূষণটি হচ্ছে ‘তড়িৎ চৌম্বকীয় দূষণ’। যার উৎস অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি। এসব যন্ত্রপাতির সুবিধা নিতে গিয়ে মানুষ লিকোমিয়া, ব্রেইন টিউমার এবং ক্যান্সারের মতো প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ব্যাপক হারে। এছাড়াও এই দূষণের ফলে স্নায়ুতন্ত্রে সমস্যা, অবসন্নতা, স্মরণশক্তি লোপ, হজমে বিপাক, অল্প বয়সেই বৃদ্ধ এবং অকালমৃত্যু ঘটছে।