একদল বানরের কথা ভাবুন তো, যারা দিনভর শীতের মধ্যে হটটাবে আয়েশ করে ডোবাডুবি করে বেড়ায়। সত্যি এমন সৌভাগ্যবান বানর আছে। অবশ্য এদের দেখা পেতে আপনাকে যেতে হবে জাপানের নাগানো অঞ্চলে। আর বানরদের এই হটটাবগুলো কিন্তু আকারে বিশাল। কারণ এগুলো আসলে প্রাকৃতিক উষ্ণ প্রস্রবণ।
জিগোকুদানি মাংকি পার্কের অবস্থান জাপানের ইয়ামানোচি শহর থেকে খুব দূরে নয়, ইয়োকইয়ো নামের এক নদীর উপত্যকায়। জাপানি শব্দ জিগোকুদানির বাংলা করলে দাঁড়ায় নরক উপত্যকা। বুদ্বুদ উঠতে থাকা ভীতিকর চেহারার উষ্ণ প্রস্রবণ, দাঁত খিঁচানো পাথুরে পর্বত এবং বরফে মোড়া প্রকৃতি—সব মিলিয়ে জায়গাটির এমন নামকরণ।
বছরের অন্তত চার মাস জায়গাটা ঢাকা থাকে বরফে। উপত্যকার চারপাশ ঘিরে আছে ২৫০০ ফুট উঁচু এবড়োখেবড়ো পর্বতের সারি। সেখানে আবার শীতল অরণ্যের অবাধ বিস্তার। এমনিতে হয়তো দুর্গম জিগোকুদানির তেমন নাম-ডাক থাকত না, যদি এখানে জাপানি ম্যাকাউ বানরেরা না থাকত। তুষারবানর নামেই বেশি পরিচিত এই বানরেরা।
শীতের সময় এই বরফরাজ্যে মানিয়ে নিলেও উষ্ণ পানির অভাবটা নিশ্চয় বেশ ভালোভাবেই অনুভব করত বানরেরা। তার পরই আশ্চর্য এক সমাধান পেয়ে গেল। গত শতকের ষাটের দশকের গোড়ার দিকে বুদ্ধিমান এই জীবগুলো প্রাকৃতিক উষ্ণ প্রস্রবণগুলোর খোঁজ পেয়ে যায়, এখানকার জল পরীক্ষা করে বানরের দল যে খুব একচোট নর্তন-কুর্দন করেছিল, তাতে সন্দেহ নেই।