আজ নয়; শুরু থেকেই পাকিস্তানের গণতন্ত্র নড়বড়ে। কোনো প্রধানমন্ত্রীই মেয়াদ পূর্ণ করে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারেননি। রাজনৈতিক ডামাডোল সেখানে সব সময়ই ছিল। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর আমলেও একই অবস্থা দেখা গেছে। সামরিক শাসন দেশটির রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে। বিশেষত আইয়ুব খানের ১০ বছরের শাসনামল থেকে প্রায় প্রতি দশকে একজন সামরিক শাসক এসেছেন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তিনটি মূল ফোর্স রয়েছে। এর মধ্যে পাঞ্জাব হচ্ছে ডমিনেটিং ফোর্স। সেনাবাহিনীর নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বেশিরভাগ সদস্য এ ফোর্সের। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করেও ক্ষমতা গ্রহণ করতে পারেনি। এর মূলে ছিল সেনাবাহিনীর কর্তৃত্ববাদী অবস্থান। সেই থেকে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে কাজ করছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
১৯৭৪ সালে জুলফিকার আলি ভুট্টো চেষ্টা করেছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কর্তৃত্ব হ্রাস করতে, কিন্তু পারেননি। বরং ভুট্টো ক্ষমতাচ্যুত ও ফাঁসিতে প্রাণ হারিয়েছেন। পরবর্তী সেনা শাসক জিয়াউল হক নির্বিঘ্নে প্রায় এক দশক ক্ষমতায় ছিলেন।
পাকিস্তানে প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচন বলা হয়ে থাকে বেনজির ভুট্টোর নির্বাচন। জেনারেল পারভেজ মোশাররফের পর সেনাবাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের জন্য আর প্রকাশ্যে হস্তক্ষেপ করেনি। কিন্তু গণতন্ত্র ও বেসামরিক প্রশাসনের প্রতি তাদের নিয়ন্ত্রণ সব সময়ই ছিল।
ইমরান খানের উত্থানও সামরিক বাহিনীর মদতেই। নওয়াজ শরিফের প্রতি বিরক্ত হয়েই সামরিক বাহিনী ইমরানকে সামনে নিয়ে আসে এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। যদিও তাঁর সঙ্গে সেনাবাহিনীর দূরত্ব সৃষ্টিতে বেশি সময় লাগেনি। সেনাপ্রধান ও আইএসআইপ্রধান নিয়োগকে কেন্দ্র করে প্রথম সূক্ষ্ম দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। কারণ তিনি চেয়েছিলেন এসব নিয়োগের কর্তৃত্ব হাতে নিয়ে আসতে।