বরাবরের মতো এই গ্রীষ্মেও রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন অঞ্চলে ঢাকা ওয়াসার পানি সরবরাহে সংকট দেখা দিয়েছে। জুরাইন, রামপুরা, বনশ্রী, মগবাজার, স্বামীবাগ, শাহজাহানপুর, খিলগাঁও, উত্তর বাড্ডাসহ বিভিন্ন এলাকায় পাইপলাইনে পানি আসছে না। অথবা যতটুকু আসে তা ময়লা-দুর্গন্ধযুক্ত। এসব এলাকার বাসিন্দার ওয়াসার পানিবাহী গাড়ি থেকে বাড়তি অর্থ ব্যয় করে পানি ক্রয় করতে হচ্ছে। অথচ নিরাপদ পানিপ্রাপ্তি নাগরিকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক অধিকার। দেশের মানুষ এখনও নিরাপদ পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
নগরে ওয়াসা এবং শহরে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পাইপলাইনে পানি সরবরাহ করা। তবে সব পৌরসভায় পাইপলাইনে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। দেশে পৌরসভার সংখ্যা ৩২৮। এর মধ্যে পাইপলাইনে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা আছে। পাইপলাইনে পানি সরবরাহের পরিমাণ ও গুণাগুণ সর্বত্র এবং সব মৌসুমে এক রকম নয়। পানির মূল্যও আবাসিক পর্যায়ে ঢাকা ওয়াসার এক হাজার লিটার পানির দাম ১৫ টাকা ১৮ পয়সা। সমপরিমাণ পানির জন্য চট্টগ্রাম ওয়াসা নেয় ১৮ টাকা; রাজশাহী ওয়াসা ৬ টাকা ৮১ পয়সা ও খুলনা ওয়াসা ৮ টাকা ৯৮ পয়সা। খুলনা শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরের চালনার বাসিন্দাদের এক লিটার পানির জন্যই গুনতে হয় ৫০ পয়সা থেকে ১ টাকা।
মাটির গভীর থেকে নলকূপের মাধ্যমে উত্তোলিত পানিকে তুলনামূলক নিরাপদ মনে করা হলেও অনেক জায়গায় আর্সেনিক দূষণ ও মাটির নিচের পানির স্তর নেমে যাওয়ার কারণে গ্রামের মানুষের জন্য নিরাপদ পানির উৎস সংকুচিত হয়ে আসছে। ২০২১ থেকে ’২২ সালে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (ডিপিএইচই) পরিচালিত সমীক্ষা অনুসারে, দেশের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক রয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও জাতিসংঘ শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) ২০১৯ সালের গুচ্ছ জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১১ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করে। সেই হিসাবে প্রায় দুই কোটি মানুষ আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছে।