শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা বিশ্ববৌদ্ধদের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মীয় উৎসব। এই দিনটি বিশ্ববৌদ্ধদের নিকট পবিত্র ও মহিমান্বিত দিন। ভগবান ব্দ্ধু বৈশাখী পূর্ণিমার বিশাখা নক্ষত্রে রাজকুমার সিদ্ধার্থ রূপে কপিলাবস্তুর লুম্বিনী কাননে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
তিনি বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে আলোকপ্রাপ্ত অর্থাৎ সর্বতৃষ্ণার ক্ষয় সাধন করে বোধিজ্ঞান লাভ করে জগৎ পূজ্য বুদ্ধ হয়েছিলেন। এই দিনে তিনি মহাপরিনির্বাণ লাভ করেছিলেন। তাঁর জীবনের মহাপবিত্র ত্রিস্মৃতি বিজড়িত বুদ্ধ পূর্ণিমা বৌদ্ধদের নিকট অতি গৌরবের ও মহাপবিত্র দিন হিসেবে উদযাপিত হয়।
বাংলাদেশের বৌদ্ধরাও নানা কর্মসূচির মাধ্যমে এই পবিত্র দিবসটি উদযাপন করছে। বুদ্ধবর্ষ গণনায় বৈশাখই প্রথম মাস। সেই হিসেবে বৌদ্ধধর্ম প্রধান দেশগুলোও তাদের পহেলা বৈশাখ, বৈশাখের প্রথম দিনে উদযাপন করে। বিশেষত থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, লাওস, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা ভারতের কিছু কিছু প্রদেশ।
বাংলাদেশও বৈশাখ মাসের প্রথম দিবসটি পহেলা বৈশাখ হিসেবে উদযাপন করে। প্রকৃতপক্ষে বুদ্ধের সময়কাল থেকেই বাঙালি জাতি বৈশাখকে প্রথম মাস হিসেবে গণনা করত। তার কারণ এদেশে বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশে পাল রাজাদের ভূমিকা ছিল।
পাল রাজারা বাঙালি ও বৌদ্ধদের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তাদের চারশত বছরের অসাম্প্রদায়িক শাসনকালকে ইতিহাসে স্বর্ণযুগ বলা হয়ে থাকে। বৌদ্ধধর্মের প্রভাবের কারণে সমগ্র এশিয়ায় বৈশাখই বছর গণনায় প্রথম মাস।
বুদ্ধের জন্মোৎসবের কারণেই এই ইতিহাসিক ঘটনা। তাই ভগবান গৌতম বুদ্ধও একজন ঐতিহাসিক মহামানব হিসেবে বিশ্ব স্বীকৃত।
একজন সাধারণ মানুষের মতো সিদ্ধার্থ গৌতমের জন্ম হয়েছিল। তার পিতা রাজা শুদ্ধোধন ও মাতা রাণী মহামায়া। শাক্য রাজ্যের রাজধানী কপিলাবস্তু থেকে মায়াদেবীর পিতৃগৃহে যাওয়ার পথে বর্তমান নেপাল রাজ্যের রম্মিদ স্থানের লুম্বিনী কাননে।
শাক্য বংশে জন্ম হয়েছিল বলে গৌতম বুদ্ধকে শাক্যসিংহ বলা হয়। তাঁর পারিবারিক নাম রাজকুমার সিদ্ধার্থ। সিদ্ধার্থের জন্মের সাত দিন পর মহামায়া মারা যান। বিমাতা মহাপ্রজাপতি গৌতমকে লালন পালন করেছিলেন বলে পরবর্তীতে গৌতম বুদ্ধ নামে বিখ্যাত হন।