প্রশ্নটা এসেছিল শ্রোতাদের পক্ষ থেকে। কোরিয়ার উন্নয়নের রহস্য কী? অল্প কথায় উত্তর দিলেন দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংক অব কোরিয়ার গভর্নর চ্যাং অং আরহি। বললেন, একটা ভালো শাসনব্যবস্থা তৈরি করতে পারাটাই উন্নয়নের বড় রহস্য। এখানে শুরু থেকেই দুর্নীতি অনেক কম রাখা সম্ভব হয়েছে। দুর্নীতি একদম নেই তা বলা যাবে না, তবে খুবই কম। অর্থনীতির ক্ষেত্রে একটা ভালো ও কার্যকর সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি অনুসরণ করা হয়েছে। ফলে স্থিতিশীলতা বজায় ছিল। আর কখনোই ধনীদের এমন কোনো সুবিধা দেওয়া হয়নি, যাতে তাঁরা অর্থ পাচারে উৎসাহী হয়ে ওঠেন। বরং কোরিয়া শুরু থেকেই অর্থ পাচার বন্ধে সব সময় অত্যন্ত সতর্ক ছিল। ফলে দেশের অর্থ দেশেই বিনিয়োগ হয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষার গুণগত মান অর্জনে বিনিয়োগ করা হয়েছে, যার ফল পেয়েছে দেশটি। উন্নয়নের আরেক বড় কারণ হচ্ছে অত্যন্ত দক্ষ একটি জনপ্রশাসন তৈরি করতে পারা। আর সর্বশেষ কারণ হচ্ছে, দেশটির মানুষ সব সময়ই অত্যন্ত পরিশ্রমী। এ জন্য পূর্বপুরুষদের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানালেন তিনি।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আলোচক ইন্দোনেশিয়ার অর্থমন্ত্রী মুলিয়ানি ইন্দ্রাবতী মেনে নিলেন যে উন্নয়নের জন্য সুশাসন হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পাশাপাশি একটি ভালো সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি প্রয়োজন, আর দরকার কম দুর্নীতি ও অর্থ পাচার বন্ধ করা, যা অনেক দেশই করতে পারেনি।
দক্ষিণ কোরিয়ার ইঞ্চনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ৫৬তম বার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন, বুধবারের আয়োজন ছিল ‘গভর্নরস সেমিনার’। অর্থাৎ এডিবির পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে সেমিনার। মূলত সদস্যদেশগুলোর অর্থমন্ত্রী বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধানেরাই এডিবির গভর্নর। এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘রিবাউন্ডিং এশিয়া: রিকভার, রিকানেক্ট, অ্যান্ড রিফর্ম’। অর্থাৎ এশিয়ার আবার ফিরে আসা: পুনরুদ্ধার, পুনঃসংযোগ এবং সংস্কার। এটিই ছিল সেমিনারের আলোচনার বিষয়। আলোচনায় আরও অংশ নেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ, জার্মানির অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়নবিষয়ক পার্লামেন্টারি স্টেট সেক্রেটারি নিয়েলস আন্নেন এবং এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া। সেমিনার সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক এবং এসওএএস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের প্রেসিডেন্ট জয়নাব বাদাউই।