রাজধানী ঢাকার অদূরেই আমিনবাজারের এক ইটভাটায় সবার মতোই কাজ করেন আনোয়ারা, সাবিনা ও সুফিয়ারা। সকাল সাড়ে সাতটায় আসেন, ফেরেন বিকাল সাড়ে পাঁচটায়। হিসাবে তা ১০ ঘণ্টা হলেও সকাল দশটায় আধা ঘণ্টা, বেলা ১২টায় আধা ঘণ্টা আর দুপুর দুইটায় খাওয়ার জন্য এক ঘণ্টা ‘জিরানি’ থাকায় কাজের সময় ভাটার হিসাবে কেটেকেটু হয় আট ঘণ্টা।
ঐতিহাসিক মে দিবসের সুফল বলতে নির্দিষ্ট একটি কর্মঘণ্টার এটুকুই নিজেদের অজান্তে পান এসব নারী শ্রমিক। তবে সবসময়ই যে তা মানা হয় তা না।
কখনও কখনও কাজ শেষ করার সময় সন্ধ্যা গড়িয়ে রাতে গিয়ে ঠেকে। মে দিবসের দুদিন আগে শনিবার যখন আনোয়ারা ও সুফিয়াদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল তখন পড়ন্ত বিকেল। চারদিক কালো করে আসছে বৃষ্টি। ঘণ্টা ধরে কাজের হিসাব যাই হোক, ভাটার নিয়ম মেনে কাঁচা-পাকা সব ইট-মাটি-কয়লা পলিথিনে ঢেকে রেখে তবেই বাড়ি ফিরতে পারবেন শ্রমিকরা। ভাটায় চলছিল সেই প্রস্তুতিই।
এমনই এক দিনের কথা স্মরণ করে মাঝবয়সী আনোয়ারা বেগম বললেন, “হেইদিন আতকা (হঠাৎ) মেঘ আইছে বেকতা ঘুইরা (ঢেকে) যাইতে যাইতে রাইত অইছে। বেতন যা তাই। কী করন যাইবো, কাম না করলে কি আর ভাত আছে?”
পাশ থেকে শ্রমিক সাবিনা বলেন, “এই বাজারে এই মজুরিতে কিছু হয় না, হওয়ান লাগে। বাজারে গেলে চাইলের কেজি ৭০ ট্যাকা। মাছ-মাংস এগুলা তো খাইই না। ডিমের হালিও ৫০ ট্যাকা। কেমনে চলি আপনেই কন।”