টাঙ্গাইলের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ খান ওরফে নয়া মুন্সিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আলম গার্ড অব অনার দিতে গেলে আপত্তি জানিয়ে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী জনগণের সামনে যা বলেছেন, তা অনভিপ্রেত। একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার উদ্দেশে তিনি যে মন্তব্য করেছেন, তা কি বলতে পারেন?
বীর মুক্তিযোদ্ধার কফিনে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনে (গার্ড অব অনার) ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নারী ইউএনও আসায় বাধা দিয়েছেন কাদের সিদ্দিকী। কিন্তু কেন তিনি বাধা দেবেন? সরকারি দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ইউএনও নারী না পুরুষ, এটা কোনো বিচার্য বিষয় হতে পারে না। কাদের সিদ্দিকী শুধু একজন নারী কর্মকর্তাকেই নয়, বরং অপমান করেছেন সমগ্র নারীসমাজকে।
জানাজার আগে ইউএনও ফারজানা আলমের উদ্দেশে কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, ‘নারীদের জানাজায় শামিল হওয়া ও গার্ড অব অনার দেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি এখানে এসে মুক্তিযোদ্ধার লাশের সঙ্গে বেয়াদবি করেছেন। যদি এখন বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন, তাহলে এখানকার অনেক কর্মকর্তাকে ঢাকায় পাঠাতাম।’ ওই ইউএনওকে এক দিনের মধ্যে সখীপুর থেকে সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
নারী নেতৃত্বাধীন একটি স্বাধীন দেশে এ রকম বক্তব্য শুনে বিস্মিত হতে হয়। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই যে প্রশ্ন আসছে, সেটা হলো, ‘গার্ড অব অনার’ কি জানাজা? একদম তা নয়। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা যাওয়ার পর তাঁকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানায় প্রশাসন। গার্ড অব অনার দিতে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত থাকেন জেলা প্রশাসক বা ইউএনও। রাষ্ট্রীয় সম্মানের অংশ হিসেবে সরকারের প্রতিনিধি হয়ে মরদেহে ফুলেল শ্রদ্ধাও জানান সংশ্লিষ্ট ওই সরকারি কর্মকর্তা। এখানে জানাজার প্রশ্নটা এল কোথা থেকে? কেন এ রকম একটি বিষয়ে বক্তব্য দিলেন কাদের সিদ্দিকী? কেন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে নারীর উপস্থিতি ও পদমর্যাদা নিয়ে এ আপত্তি তোলা হচ্ছে?