রণজিৎ গুহের বিদায় এবং ‘হতে পারতো’ দেশের মায়া

সমকাল ফারুক ওয়াসিফ প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০১:৩১

রাতের ট্রেনের ভোর হলো গুজরাটের গ্রামাঞ্চলে। জানালা দিয়ে তিনি দেখলেন, এক শীর্ণ মূর্তি উঠে আসছে দিগন্তের কাছে। পেছনে সূর্য উঠছে। তার মাথায় গামছার মতো কিছু পেঁচানো, হাতে চিকন লাঠি। তাঁর মন চমকে উঠল, আরে এ তো গান্ধী! মহাত্মা করমচাঁদ গান্ধী। এক লহমায় তিনি গান্ধীর সঙ্গে নিম্নবর্গের কৃষকের যোগাযোগের সুতাটি ধরে ফেললেন। উপন্যাসে যেমনটা ধরেছিলেন সতীনাথ ভাদুড়ী তাঁর ‘ঢোঁড়াই চরিত’ মানসে। যাহা সুতা তাহাই সূত্র অর্থাৎ চিন্তা। এই সুতা ধরেই রচিত হতে থাকল নিম্নবর্গের ইতিহাসনামা। এই লোকটির নাম রণজিৎ গুহ, অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় শতবর্ষী এই মানুষটি প্রয়াত হলেন ২৯ এপ্রিল। ২৩ মে তাঁর শতবর্ষ পূর্ণ হওয়ার কথা ছিল।


রণজিৎ গুহের সেই ইতিহাসের ট্রেনটি সে সময়ের পূর্ব বাংলা দিয়ে যদি যেত, তাহলে তিনি দেখতে পেতেন মওলানা ভাসানীকে। লুঙ্গি পরা লম্বা দাড়ির মানুষটি; যার কাঁধে গামছা, মাথায় তালের টুপি–পুব-বাংলার কৃষকের আসল লেবাস। সেই লেবাসেই সন্তোষের লাল মওলানা হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের মজলুম মানুষের অবিসংবাদী নেতা। মজলুমের বিপরীত হলো জুলুমবাজ আর জুলুমের বিরুদ্ধে মজলুমের বিদ্রোহ তো ন্যায়সঙ্গত। রণজিৎ গুহ যেমন তাঁর ‘এলিমিন্টারি অ্যাসপেক্টস অব পিজ্যান্ট ইনসার্জেন্সি ইন কলোনিয়াল ইন্ডিয়া’ নামের চিন্তা-কাঁপানো পুস্তকে লিখেছেন, উপনিবেশবাদের জরুরি বিবাদ (Anti-thesis) হলো বিদ্রোহ এবং কৃষকের নৈতিকতায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ন্যায্য। এই বইটার অন্যতম কীর্তি হলো, কৃষককে তাঁর নিজের ইতিহাসের চালক ও বাহক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। একে বলা হয় ‘প্যারাডাইম শিফট’। রণজিৎ দেখান, জাতীয়তাবাদীরা ছাড়াও কলোনিয়াল-জমিদারি শাসনের অন্যতম প্রধান প্রতিপক্ষ ছিলেন কৃষকরা। ইংরেজের প্রথম ১১১ বছরের ১১৮টি কৃষক বিদ্রোহ সেই দিকটাই নির্দেশ করে। জাতীয়তাবাদ ও কৃষক চৈতন্য চুলের বেণীর মতো অনেকদূর পরস্পরকে পেঁচালেও শেষ প্রান্তে কিন্তু আলাদাই থেকে যায়।


গান্ধীর বেশ কৃষকের হলেও বাংলার কেন, কোনো দেশের কৃষকই কোনোকালে অহিংস ছিলেন না। তাঁরা বরং এসএম সুলতানের মহাকাব্যিক চিত্রকলার বেশি কাছাকাছি। তাঁরা নদী সেচে আবাদ করেন, বানের মুখে বাঁধ দেন, বন কেটে বাঘ তাড়িয়ে আবাদ করেন, লাঠি হাতে জমিদারের জুলুম ঠেকান। রণজিৎ গুহের ছাত্র অধ্যাপক আহমেদ কামালের কাছে শোনা, গান্ধীর মতো ভাসানীকে নিয়েও বড় মাপের গবেষণা করার আগ্রহ ছিল রণজিৎ গুহের। যেমন স্বপ্ন ছিল পিতৃভূমি বরিশালের সিদ্ধকাঠিতে ফেরার; মাসের পর মাস বরিশালের নদনদীতে নৌকায় ঘুরবার। যাকে বলে ‘ফর্মেটিভ ইয়ার্স’, সেটা তো শৈশব। শৈশবের কাছে ফেরার কথা ফ্রয়েডীয় চিন্তায় আছে। রণজিৎ গুহের মনেও কি বাসনা ছিল?


সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us