আবু বকর সিদ্দিক নামে একজন পিএইচডি ডিগ্রিধারী কৃষক; বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা চাকরি ছেড়ে দিয়ে যিনি পুরোপুরি কৃষি কাজে মনোনিবেশ করেছেন, তিনি যেদিন তার ফেসবুক ওয়ালে এরকম একটি পোস্ট দিলেন যে, এক হাজার টাকা মণ না হলে কৃষক তার ধানের উৎপাদন খরচও তুলতে পারবে না, সেদিনই ডেইলি স্টার অনলাইনের একটি খবরের শিরোনাম: 'কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছে ছাত্রলীগ'।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বগুড়ায় কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা গাবতলী উপজেলার পাঁচকাতুলী গ্রামের নুরুলের বিলে ২ কৃষকের ১৫-১৬ শতক ধান কেটে দেন।
পাঁচকাতুলী গ্রামের কৃষক মাসুদ করিম কচি বলেন, 'আমার মাত্র ৫ শতক জমির ধান পেকেছে। কিন্তু, এত অল্প ধান কাটার কোনো শ্রমিক পাচ্ছি না। তা ছাড়া শ্রমিকের খরচও বেশি। ছাত্রলীগ এই খবর পেয়ে আমার ধান কেটে দিয়েছে। এভাবে সাধারণ কৃষকের ধান কেটে দিলে অনেক কৃষক উপকৃত হবে।'
কিন্তু প্রশ্ন হলো, ছাত্রলীগকে কেন কৃষকের ধান কেটে দিতে হবে? সমস্যাটা কোথায়?
গণমাধ্যমের খবর বলছে, অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে শ্রমিকদের মজুরি এবার বাড়তি। আবার বাইরে থেকে শ্রমিক কম আসায় সংকট রয়েছে। ঝড়বৃষ্টির আশঙ্কায় জমির পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তা তো ছিলই।
অনেক কৃষক বলেছেন, সার, বীজ, সেচ ও কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার ধান ফলাতে অনেক ধারদেনা করতে হয়েছে। শ্রমিক দিয়ে ধান কাটা ও মাড়াইয়ে আরও অনেক টাকার দরকার হতো। ফলে কোনো প্রতিদান ছাড়াই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধানগুলো কেটে ঘরে তুলে দিয়েছেন—তাতে তারা খুবই খুশি।