২ ফেব্রুয়ারি ১৯৬২। পঙ্কজ ভট্টাচার্যের সাথে আমার প্রথম পরিচয় পাকিস্তান আমলে সামরিক শাসন বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে। তারই ধারাবাহিকতায় বাষট্টির সেপ্টেম্বরে শিক্ষা আন্দোলনে একসাথে কাজ করা এবং ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ভিত্তিতে সেই বছর শীতে স্বামীবাগে অনুষ্ঠিত গোপন কনভেনশনে ছাত্র ইউনিয়নের পুনর্জীবনের সম্মেলনে তার সাথে দেখা।
সেই যুগে চারটি ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ থাকলেও মূল চালিকাশক্তি ছিল ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়ন। সভা ও মিছিলে সারাদিন, কখনো বিনিদ্র ক্লান্তিহীন রাত কেটেছে। ১৯৬৩ সালে ঢাকা ফুলবাড়িয়া স্টেশনের পাশে মাহবুব আলী ইন্সটিটিউটে ছাত্র ইউনিয়নের প্রকাশ্য সম্মেলনে পঙ্কজ ভট্টাচার্য, মতিয়া চৌধুরী, রাশেদ খান মেননের সাথে আমিও সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছি।
অবশ্য পঙ্কজ ভট্টাচার্যের সাথে ছাত্র আন্দোলনে দৈনন্দিন কাজ করলেও তাকে নেতা মেনেছি; সেটি কেবল কিঞ্চিৎ বয়সের তারতম্যের কারণে নয়, তার নিষ্ঠা ও নেতৃত্ব গুণে। ইতিমধ্যে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি বদরুল হক (পরে বিচারপতি ও প্রয়াত) কারারুদ্ধ হলে পঙ্কজ ভট্টাচার্য কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে প্রায় প্রতিদিন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভায় যোগ দিয়ে ঐক্যমতের ভিত্তিতে কর্মসূচি স্থির করেছেন।
তেজোদীপ্ত ভরাট কণ্ঠের বক্তা ও অসাধারণ সাংগঠনিক গুণাবলীর অধিকারী পঙ্কজ ভট্টাচার্য অনায়াসে ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মধ্যে আপন স্থান করে নেন। তিনি ষাটের দশকে কারাজীবন ও আত্মগোপন অবস্থানে থেকেও সক্রিয় রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করে গেছেন।