জাফর ভাইকে ডায়ালাইসিস নিতে হবে, এটা আমি কখনো ভাবিনি। কিন্তু তিনি নির্বিকার। কোনো কাজের কথা থাকলে ফোন দিলেই চলে যেতাম। কাজের গতিতে কোনো খামতি নেই। যখন অসুস্থতা তাকে কাবু করে ফেলছে, তারপরও টেলিভিশন টকশোতে হাজির থাকতেন। ডায়ালাইসিস নিতে নিতে নিজের বেডে বসে কথা বলেছেন। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচিতে হুইলচেয়ারে বসে ছুটে গিয়েছেন। মৃত্যুর আগে বাধ্য হয়ে হাসপাতালের বিছানায় জোর করে তাকে ধরে বেঁধে রাখতে হয়েছে।
একদমই অসুস্থ হয়ে পড়ার পর একদিন তাকে দেখে মানসিকভাবে ভীষণ বিপর্যস্ত হয়ে যাই। ঠিক করেছিলাম আর যাব না। এই শীর্ণকায় অসুস্থ জাফর ভাইকে আমি চিনি না। মৃত্যুর দুদিন আগে ফরিদা আখতার আর আমি আবার গিয়েছিলাম। বসতে চেয়েছিলেন, ধরে ডাক্তার-নার্সদের চেষ্টায় বসানো হলো কিছুক্ষণ। একটু পানি খেতে চেয়েছিলেন সে সময়। তাকে বসা অবস্থায় এই শেষ দেখা। এরপর সেই অমোঘ রাত্রি এলো। সাদা পোশাকে যখন তিনি শেষবারের মতো যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন, তখন আরেকবার দেখলাম।