লেখাটি আরও একদিন আগেই লেখার কথা এবং লেখাটির বিষয়ও ঈদকে ঘিরে। যেভাবে লিখব ভেবেছিলাম সেটি আর হয়নি। নিউ সুপার মার্কেটে আগুন লাগা এবং আমার আসা-যাওয়া নিউমার্কেটের কাছাকছি হওয়ায় লেখাটি লেখার জন্য বসতে পারিনি। আজকে আগুনের আগ্রাসী শিখায় অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা। গত ৪ এপ্রিলও বঙ্গবাজারে আগুন লেগে সর্বস্ব হারিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ঈদ উপলক্ষে এই নিউ সুপার মার্কেটের তিনতলা থেকে চার দিন আগেই আমি কিছু কাপড় কিনেছি। আজ সেই কাপড়গুলোর দিকে তাকিয়ে থাকতে পারছি না। সেই দোকানদারের মুখটাও চোখের সামনে ভাসছে। সুঁই, সুতা, শাড়ির ফলস সাধারণত এই তিনতলা থেকেই কিনি। মনে পড়ে কতবার দৌড়ে তিনতলায় গিয়েছে শাড়ি কিংবা জামায় একটু ব্লক করে নিয়ে আসতে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই যাওয়া এই তিনতলার মার্কেটে। আজ সব পুড়ে শেষ। বেশ কয়েকজন বয়স্ক নারীকে সেই তিনতলাতেই দেখতাম সেলাইয়ের মেশিন নিয়ে অনবরত সেলাই করে যাচ্ছেন। জানি না এখন তারা কী করবেন? এই আগুনের ছাইয়ের স্তূপ থেকে আবারও মেশিনটি চালাতে পারবেন কিনা।
অন্য সময়ের চেয়ে এই সময়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণ হলো ঈদ। সাধারণত এই সময়ে অনেক বেশি ব্যস্ত থাকেন বিক্রেতারা। এবারের ঈদের বোনাস গত সপ্তাহের শেষে দেওয়ায় খুব স্বাভাবিকভাবেই গত শুক্রবার অনেকেই মার্কেটে গিয়েছেন শপিং করতে। তার ওপর এই শুক্রবারই বাংলাদেশে পালিত হয়েছে নববর্ষ। তাই দোকানিরা রাত প্রায় তিনটা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন। অনেকেই আবার অনেক মাল এনেছেন শেষের সাত দিনকে টার্গেট করে। অনেকে ধার করেছেন, আশা ছিল বিক্রি হলেই শোধ দিয়ে দেবেন অতিদ্রুত। কিন্তু পুড়ে গেছে কাপড়, পুড়েছে ঈদের আনন্দও। নিউ সুপার মার্কেটের একতলা থেকে তিনতলায় অনেক শ্রমিক কাজ করেন। সবাই যে মালিক তা নয়।