চৈত্রের শেষে এ সময়ে যে হালকা বাতাস বইছে, তা লু হাওয়ার মতো গায়ে বিঁধছে। একেই হয়তো বলে ফোস্কা পড়া গরম। চারদিক দিয়ে যেন আগুনের হলকা বের হচ্ছে। রাজধানীতে গত আট বছরের মধ্যে আজকের মতো গরম কখনো অনুভূত হয়নি। বাতাসে আর্দ্রতা অস্বাভাবিক কম থাকায় গরমের সঙ্গে ঠোঁট ও চামড়া ফেটে যাচ্ছে। শরীরে অনুভূত হচ্ছে তীব্র জ্বালাপোড়ার।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এর আগে এর চেয়ে বেশি তাপমাত্রা উঠেছিল ২০১৪ সালের ১৪ এপ্রিল। আজকের সমান তাপমাত্রা এর আগে ২০২১ সালে আরেকবার উঠেছিল। তবে এবার বাতাসে আর্দ্রতা স্বাভাবিকের তুলনায় ৩০ শতাংশ কম। তাই গরমের কারণে মানুষের কষ্ট ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে।
সাধারণত কোনো এলাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে সেখানে মৃদু দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে বলে ধরা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করলে সেখানে মাঝারি দাবদাহ এবং ৪০ অতিক্রম করলে তীব্র দাবদাহ চলছে বলে ধরা হয়। ঢাকায় বর্তমানে তীব্র দাবদাহের কাছাকাছি তাপমাত্রা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, ঢাকাসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় গরমের তীব্রতা আগামীকাল শুক্রবার আরেক দফা বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে আর্দ্রতা পরিস্থিতির আপাতত কোনো উন্নতির সম্ভাবনা নেই। অর্থাৎ বাতাসে জলীয় বাষ্পের জোগান খুব বেশি বাড়বে না। ফলে গরমের সঙ্গে শরীর জ্বালাপোড়া এবং ঠোঁট ও চামড়া ফেটে যাওয়ার কষ্ট থেকে যাবে। ১৭ এপ্রিলের আগে বাতাসে আর্দ্রতা বাড়ার সম্ভাবনা নেই।
এ নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, বছরের এই সময়ে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় স্থানভেদে ৩০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কম। আকাশে মেঘ সৃষ্টি ও ভেসে আসার সম্ভাবনাও কম। ফলে একদিকে তাপমাত্রা বাড়ছে, অন্যদিকে আর্দ্রতার কারণে কষ্ট আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। এ পরিস্থিতি আরও তিন-চার দিন চলতে পারে।