প্রভুর ইচ্ছা নানাভাবে কাজ করে- কখনো সরাসরি, অনেক সময়ে গোপনে। আধিপত্যের একটা সংস্কৃতিই গড়ে ওঠে। প্রভুভক্তদের পক্ষে তো অবশ্যই, এমনকি যারা বিদ্রোহ করে তাদের অনেকের পক্ষেও বৃত্তটা ভেঙে বের হয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না, যদি না খুব বড় কিছু ঘটে কিংবা ঘটানো সম্ভব হয়। আর পরিবর্তনের পরও প্রায়ই টের পাওয়া যায় যে, প্রভু বদল হয়েছে বটে, প্রভুত্বের বদল হয়নি। গোলামিরই হোক, হোক আনুগত্যের কিংবা মেনে নেওয়ার, আধিপত্যের চিত্রটাকে আশাব্যঞ্জক বলা সহজ নয়। তবু সমষ্টিগতভাবে মানুষ কখনই পুরোপুরি আত্মসমর্পণ করে না, বদলাতে চায়, আশা রাখে এবং বদলাতে যে পারে না এমনো নয়।
কিন্তু প্রভুটা কে? প্রভু কোনো ব্যক্তি নয়, প্রতিষ্ঠান নয়, প্রভু হচ্ছে একটি ব্যবস্থা, যেটা সুবিস্তৃত ও সুগভীর এবং একই সঙ্গে স্থানীয় ও বিশ্বজুড়ে ব্যাপ্ত। ব্যবস্থাটার নাম পুঁজিবাদ। পুঁজিবাদ যেমন একটি অর্থনৈতিক বিধিব্যবস্থা, তেমনি আবার একটি আদর্শও বৈকি। এই অর্থনৈতিক ও আদর্শিক আয়োজন দাসত্বের সৃষ্টি করে; কেবল দরিদ্রদের জন্য নয়, তাদের জন্যও যারা ধনী। ধনী-দরিদ্র সবাই বন্দি হয়ে থাকে মুনাফার লোভ ও ভোগবাদী লালসার এবং আত্মকেন্দ্রিকতার ও বিচ্ছিন্নতার হাতে।