বাংলাদেশের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিন ব্যাট করছে আয়ারল্যান্ড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: আয়ারল্যান্ড ২১৪ এবং ৪৭ ওভারে ৯৩/৫ (বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩৬৯)
প্রথম সেশনে স্রেফ ১ উইকেট
তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে একটির বেশি উইকেট নিতে পারেনি বাংলাদেশ। শুধু পিটার মুরের উইকেট হারিয়েছে আয়ারল্যান্ড। হ্যারি টেক্টর ও লরকান টাকারের জুটিতে ইনিংস ব্যবধানে পরাজয় এড়ানোর লড়াইয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে তারা।
ইনিংসের ৪৭ ওভার শেষে আইরিশদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৯৩ রান। তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে ৩০ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৬৬ রান তুলেছে তারা। বাংলাদেশকে আবার ব্যাটিংয়ে নামাতে তাদের করতে হবে আরও ৬২ রান।
আগের দিন গড়া ৬৩ বলে ১৪ রানের জুটিতে এদিন প্রায় এক ঘণ্টা টেনে নেন মুর ও টেক্টর। প্রথম ঘণ্টার বিরতির ঠিক আগে ৭৮ বলে ১৬ রান করে মুরকে কট বিহাইন্ড করেন শরিফুল ইসলাম।
তার বিদায়ে ভাঙে ১৫৪ বল স্থায়ী ৩৮ রানের জুটি।
আবার প্রতিরোধের আভাস দিচ্ছেন টেক্টর ও টাকার। তবে তুলনামূলক দ্রুত রান তুলছে এই জুটি। লাঞ্চ বিরতি পর্যন্ত দুজন মিলে একসঙ্গে ব্যাটিং করে ৮৯ বলে যোগ করেছেন ৪২ রান।
নিজের অভিষেকে প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা টেক্টর আরেকটি পঞ্চাশের দুয়ারে পৌঁছে গেছেন। ৫ চার ও ১ ছয়ে ১৩২ বলে ৪৩ রান করেছেন তিনি। কিপার-ব্যাটসম্যান টাকার ৪ চারে ৪৩ বলে ২৪ রানে অপরাজিত।
মুরকে ফিরিয়ে প্রতিরোধ ভাঙলেন শরিফুল
তৃতীয় দিনে প্রথম সাফল্য এনে দিলেন শরিফুল ইসলাম। পিটার মুরকে ফিরিয়ে ভাঙলেন আইরিশদের প্রতিরোধ।
স্পিনার দিয়ে আক্রমণ শুরু করে উইকেট না পাওয়ায় দিনের ১৩ ওভার পর বাঁহাতি পেসারের হাতে বল তুলে দেন সাকিব আল হাসান। নিজের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই দলকে আনন্দে ভাসালেন শরিফুল।
অফ স্টাম্পে পিচ করা শর্ট অব লেংথ ডেলিভারিটি অ্যাঙ্গেলে আরও বেরিয়ে যাচ্ছিল। পেছনের পায়ে দাঁড়িয়ে স্কয়ার কাট খেলার চেষ্টা করেন। ব্যাটের বাইরের কানায় লাগা বল অনায়াসে গ্লাভসে নেন লিটন কুমার দাস।
দলীয় পঞ্চাশ পেরোনোর পরপর ১৬ রানে ফিরলেন মুর। তার বিদায়ে ভাঙল ১৫৪ বল স্থায়ী ৩৮ রানের জুটি।
৩৩ ওভারে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৫২ রান। ইনিংস ব্যবধানে পরাজয় এড়াতে প্রয়োজন আরও ১০৩ রান।
নতুন ব্যাটসম্যান লরকান টাকার। ২৫ রান নিয়ে খেলছেন হ্যারি টেক্টর।
আধ ঘণ্টা নির্বিঘ্নে পার আইরিশদের
তৃতীয় দিনের প্রথম আধ ঘণ্টায় কোনো বিপদ ঘটতে দেননি হ্যারি টেক্টর ও পিটার মুর। এই সময়ের মধ্যে ১০ ওভারে ১৯ রান তুলেছেন এই দুজন। জুটির সংগ্রহ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ রান।
দুই প্রান্ত থেকে বোলিং শুরু করেন সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলাম। আউটের সুযোগ তৈরি করেছিলেন তাইজুল। তবে উইকেটের পেছনে কঠিন সেই ক্যাচ নিতে পারেননি লিটন কুমার দাস।
তিন ওভার করে আক্রমণ থেকে সরে যান সাকিব। তার জায়গায় আসেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তাইজুল-মিরাজের বোলিংয়ে বেশ কয়েকবার পরাস্ত হন টেক্টর ও মুর। তবে কোনোটিতেই আউটের জোরাল সম্ভাবনা জাগেনি।
উল্টো আলগা ডেলিভারি পেলেই শট খেলেছেন টেক্টর। তাইজুলকে লং অন দিয়ে মেরেছেন ছক্কা। মিরাজের বলে রিভার্স সুইপে আদায় করে নিয়েছেন বাউন্ডারি। ব্যাক ফুট পাঞ্চে চার মেরেছেন মুরও।
২৭ ওভারে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৪৬ রান। ইনিংস ব্যবধানে পরাজয় এড়াতে প্রয়োজন আরও ১০৯ রান। মুর ১৫ ও টেক্টর ২১ রানে খেলছেন।
কঠিন সুযোগ হাতছাড়া লিটনের
দিনের শুরুতেই উইকেটের সম্ভাবনা জাগালেন তাইজুল ইসলাম। তবে বল গ্লাভসে নিতে পারলেন না লিটন দাস। ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গেলেন হ্যারি টেক্টর।
তাইজুলের ফুল লেংথে বাতাসে ঝুলিয়ে করা ডেলিভারি সামনের পায়ে ডিফেন্ড করেছিলেন টেক্টর। টার্নের মুখে তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল চলে যায় উইকেটের পেছনে। তবে বেশ জোরের ওপর যাওয়া বল ধরতে পারেননি লিটন।
প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা টেক্টরের সে সময় রান ছিল ৯। বেঁচে গিয়ে তাইজুলের পরের ওভারে ইনিংসের প্রথম ছক্কা মারেন আইরিশ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।
সাকিব আল হাসান ও তাইজুলের করা দিনের প্রথম পাঁচ ওভারে ৭ রান করেছে আয়ারল্যান্ড। ২২ ওভারে তাদের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৩৪ রান। টেক্টর ১৫ ও পিটার মুর ১০ রানে খেলছেন।
দ্বিতীয় দিন শেষ ম্যাচ যেখানে দাঁড়িয়ে
মিরপুর টেস্টে দ্বিতীয় দিন শেষেই জয়ের ছবি দেখছে বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরি এবং সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজের ফিফটিতে প্রথম ইনিংসে ৩৬৯ রান করে ১৫৫ রানের লিড নেয় বাংলাদেশ। সাকিব ও তাইজুল ইসলামের স্পিন ঝলকে সেটাই যেন হয়ে গেছে পাহাড়সম।
দ্বিতীয় দিন শেষ বেলায় ১৭ ওভার ব্যাটিং করে ৪ উইকেট হারিয়েছে আয়ারল্যান্ড। করতে পেরেছে কেবল ২৭ রান।
বাংলাদেশকে আবার ব্যাটিংয়ে পাঠাতে আরও ১২৮ রান করতে হবে আইরিশদের। ধীরে ধীরে স্পিনারদের জন্য সহায়তা বাড়ছে উইকেটে। সাকিব, তাইজুল ও মেহেদী হাসান মিরাজের সামনে কাজটা সহজ নয় সফরকারীদের জন্য।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (দ্বিতীয় দিন শেষে):
আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২১৪
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩৬৯
আয়ারল্যান্ড ২য় ইনিংস: ১৭ ওভারে ২৭/৪ (কমিন্স ১, ম্যাককলাম ০, বালবার্নি ৩, টেক্টর ৮*, ক্যাম্পার ১, মুর ১০*; সাকিব ৭-২-১১-২, তাইজুল ৭-৪-৭-২, মিরাজ ২-১-১-০, ইবাদত ১-০-৪-০)