চট্টগ্রাম নগরীর সিটি গেট থেকে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট ও পাকা রাস্তার মাথা এলাকার বাসিন্দাদের একমাত্র ভরসা ওয়াসার পানি। গত এক মাস ধরে ওয়াসার পানি সরবরাহ বন্ধ এই এলাকায়। খাওয়া ও দৈনন্দিন কাজে প্রয়োজনীয় পানির সংকটে চরম বিপাকে পড়েছে এখানকার বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় চার কিলোমিটার এলাকায় হাজারেরও বেশি পরিবার জীবন ধারণের জন্য ওয়াসার পানির ওপর নির্ভরশীল। গত মাসের শেষ দিক থেকে হঠাৎ ওয়াসার (চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ) পানি সরবরাহে সংকট দেখা দেয়। চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়ে এখানকার বসবাসকারী বাসিন্দারা। এই রমজান মাসে সাহরি ও ইফতারের আগে রান্নায় ব্যবহৃত পানি না পেয়ে বিপাকে পড়তে হয়।
ওয়াসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় হালদার পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ অনেকটা বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে কমেছে কাপ্তাই লেকের পানি। যার ফলে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে কর্ণফুলী নদীতে পানি ছাড়া হচ্ছে না। এতে কমেছে নদীর উজানে মিঠাপানির প্রবাহ। জোয়ারের সঙ্গে কর্ণফুলী হয়ে হালদা নদীতে ঢুকছে সাগরের লোনাপানি। ফলে মোহরা শোধনাগারে পানি শোধনের পরও অতিরিক্ত লবণ থেকে যাচ্ছে। গভীর নলকূপের পানি মিশিয়ে সমস্যা কাটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এক মাস খুবই পানির সংকটে সংকট ছিল এলাকাবাসী। ওই সময়ে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন হলেও যাতে পানি সরবরাহ অব্যাহত রাখা যায়, সেই চেষ্টা ছিল তাদের। বর্তমানে তারা রেশনিং করে পানি সরবরাহ করছে।
সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ওয়াসার পানির ওপর নির্ভরশীল এই এলাকায় হাজারো মানুষ। তবে গত এক মাস ধরে ওয়াসার পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। সেই সঙ্গে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় উঠছে না নলকূপের পানি। ফলে ওয়াসার গ্রাহকের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারা পানির তীব্র সংকটে পড়েছে।
কালুশাহ এলাকার বাসিন্দা আবদুল করিম বলেন, গত এক মাস ধরে ওয়াসার পানির পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় তাঁরা চরম বিপাকে পড়েছেন। ফলে জীবন ধারণে এই পানির ওপর নির্ভরশীল অনেক পরিবার এক থেকে দুই কিলোমিটার দূরের পুকুর থেকে বোতলে করে পানি সংগ্রহ করে আনছেন। ওই পানি দিয়ে রান্না ও খাওয়ার কাজ চললেও গোসলের পানি মিলছে না কোথাও। এতে বাধ্য হয়ে অনেক ভাড়াটিয়া পরিবার আশপাশের এলাকায় থাকা স্বজনদের বাড়িতে গিয়ে গোসল সারছে।