বিদায় মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী

আজকের পত্রিকা জাহীদ রেজা নূর প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০২৩, ২১:৩১

২৭ মার্চ অফিস থেকে ফিরছি, এ সময় অজানা নম্বর থেকে একটা ফোনকল এল। রিসিভ করতেই ও প্রান্ত থেকে নূরে আলম সিদ্দিকীর কণ্ঠ, ‘আব্বু, তোমার ফোন নম্বর পেয়ে গেছি। এবার থেকে কিন্তু আমি নিজেই ফোন করব।’


নূরে আলম কাকার বেশ কয়েকটি ফোন। তাঁর দুটির নম্বর আমার কাছে আছে। বাকিগুলোর নেই। সেই ‘নেই’ নম্বরের একটি থেকেই ফোনটা এসেছে। তাঁর সচিব অনিকেত রাজেশের কাছ থেকে আমার নম্বরটি নিয়েছেন।


বিগত কয়েক মাসে অনেকবার তাঁর কাছে গিয়েছি। যে আত্মজীবনীটি লিখছিলেন, সেটার কোথাও তথ্য ভরাট করার দরকার থাকলে সে বিষয়ে তাঁর কাছে জেনে নিয়েছি। এভাবেই বইটি প্রায় প্রস্তুত হয়ে গেছে। সেই ২০১২-১৩ সালের দিকে আমার অগ্রজ শাহীন রেজা নূর তাঁর কাছ থেকে তাঁর রাজনৈতিক জীবনটা সম্পর্কে জেনে নিচ্ছিলেন। আত্মস্মৃতি প্রকাশ করার প্রবল ইচ্ছে ছিল তাঁর। কিন্তু এরই মধ্যে শাহীন ভাই নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়লেন এবং মারা গেলেন। ফলে নতুন করে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হলো। সে কারণেই ছক কেটে তাঁর সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ এবং বইটিকে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছিলাম।


তিনি বললেন, ‘এত দিন তো তুমি ফোন করেছ, এবার থেকে আমিও তোমাকে ফোন করব। বইয়ের জন্য আর কিছু কি লাগবে?’


বললাম, ‘বাহাত্তর থেকে পঁচাত্তর পর্বটায় কোনো কোনো ঘটনা সম্পর্কে আপনার আরও কিছু মন্তব্য থাকলে ভালো হতো।


এর মধ্যে কয়েকটি বিষয়ে আপনাকে বলেওছিলাম। আপনি বাতিল করে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেগুলো না থাকলে ধারাবাহিকতায় সমস্যা হয়।’ 


‘ঠিক আছে, বলব। কাল ফোন কোরো আব্বু। তিনটার পর ঘুম থেকে উঠে যাব।’


২৮ মার্চ আমার প্রশ্নগুলো ঠিক করে তাঁকে ফোন করলাম। কিন্তু তিনটি ফোনের কোনোটাতেই কোনো সাড়া পেলাম না। ভাবলাম, ঠিক আছে, পরেও তো কথা 
হতে পারে।


২৭ মার্চ করা ফোনটাই যে নূরে আলম কাকার শেষ ফোন হবে, সেটা বুঝতে পারিনি তখন। আজ লিখতে বসে মনটা বেদনায় আকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। সকালে তাঁর প্রাণহীন দেহটা দেখে হু হু করে উঠল মন। 


২. ছাত্রলীগের মধ্যে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ধারায় যে রাজনীতি এগিয়েছিল, তারই একজন প্রবক্তা ছিলেন নূরে আলম সিদ্দিকী। নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির যে পথটি নির্মিত হয়েছিল হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে, যে ধারাটিকে লেখনীর মাধ্যমে সামনে এগিয়ে নিয়ে গেছেন ইত্তেফাকের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া ও সিরাজুদ্দীন হোসেন, সে পথেই এগিয়েছেন নূরে আলম সিদ্দিকী।


১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলনের সময় তিনি বড় নেতা নন, কিন্তু ঐতিহাসিক ৭ জুন তাঁকে প্রথম সারির নেতা হিসেবে তৈরি করে। তেজগাঁও এলাকায় হরতালের সময় পুলিশের গুলিতে তাঁরই হাতে ঢলে পড়েছিলেন মনু মিয়া। মনু মিয়ার রক্তাক্ত জামা নিয়ে মিছিল করেছিলেন তিনি। এর কিছুদিন পর গ্রেপ্তার হলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বঙ্গবন্ধুর সংস্পর্শে আসেন। বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইয়ে অনেকবার রয়েছে নূরে আলম সিদ্দিকীর প্রসঙ্গ।


উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের পর জেল থেকে বের হন তিনি। এর আগেই জ্বালাময়ী ভাষণ রপ্ত করেছিলেন। তাঁর ভাষণ ছিল সাহিত্যরসে ভরপুর এবং রাজনৈতিক তেজদীপ্ততায় ঋজু। সে সময় যাঁরা নূরে আলম সিদ্দিকীর ভাষণ শুনেছেন, তাঁরা এক প্রবল উন্মাদনা নিয়ে বাড়িতে ফিরতেন, তাঁদের মনে থেকে যেত সেই ধ্রুপদি ভাষণের রেশ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us