বয়সজনিত কারণে কানের সমস্যা, ইনজুরি অথবা সারকুলেটুরি সিস্টেম ডিসঅর্ডারের লক্ষণরূপেও কানে শোঁ শোঁ শব্দ বা টিনেটাস হতে পারে। পৃথিবীতে প্রতি পাঁচজনের একজন টিনেটাস রোগে ভুগে থাকেন। যদি কোনো ব্যক্তি কানে ভোঁ ভোঁ, বাতাসের শব্দ শোঁ শোঁ, ঘণ্টার ধ্বনি অনবরত শুনতে থাকে, তখন এ ধরনের কন্ডিশনকে বলে টিনেটাস। যে জায়গায় শব্দদূষণ বেশি, সেখানকার মানুষের এ ধরনের সমস্যা বেশি দেখা যায়। টিনেটাস সমস্যায় নারীর চেয়ে পুরুষই বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
কারণ : টিনেটাস রোগের সমস্যা কানের মধ্যে হলেও এর উৎপত্তিস্থল মস্তিষ্ক। আমাদের মস্তিষ্ক অনেক নার্ভ দিয়ে গঠিত। একেক নার্ভের কাজ একেক রকম। মস্তিষ্কের যে অংশ দিয়ে শব্দ প্রক্রিয়াজাত করা হয়, সেই অংশের নাম অডুটরি করটেক্স। আর এ অংশের মধ্যে থাকে অষ্টম ক্রেনিয়াল নার্ভ ভেসটিবুলোকোকলিয়ার। এ নার্ভের সমস্যা হলে টিনেটাস হয়ে থাকে। আবার অন্তঃকর্ণের কোষের সমস্যার কারণেও টিনেটাস হতে পারে। আমাদের কানের ভেতর ক্ষুদ্র লোম আছে, যেগুলো শব্দতরঙ্গের সঙ্গে নড়াচড়া করে। এ কোষগুলো এক ধরনের ইলেকট্রিকাল সিগন্যাল অষ্টম ক্রেনিয়াল নার্ভের মাধ্যমে আমাদের মস্তিষ্কে পাঠায়। মস্তিষ্ক এ সিগন্যালের প্রতিক্রিয়ারূপে সিগন্যাল পাঠায়। এজন্য আমরা শব্দ শুনতে পাই। যদি এ লোমগুলো ছিঁড়ে যায় বা সঠিকভাবে কাজ না করে, তখন মস্তিষ্কে অনিয়মিত ভুল ইলেকট্রিকাল ইমপালস পৌঁছায়। ফলে টিনেটাস আক্রান্ত ব্যক্তি কানে অ্যাবনরমাল শব্দ, যেমনÑ ভোঁ-ভোঁ ঝিঁঝি, শোঁ-শোঁ, ঘণ্টার ধ্বনি শুনতে পায়। এছাড়া উচ্চ শব্দস্বর, কানে ময়লা জমা হলে এবং কানের মধ্যে এবনরমাল হাড় বেড়ে গেলেও টিনেটাস হতে পারে।