যোগব্যায়ামে ক্যারিয়ার
জীবনে যোগব্যায়াম থেকে অনেক উপকার পেয়েছেন। ফলে যাঁরা শারীরিক ও মানসিকভাবে বিভিন্ন সমস্যার মধ্য় দিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের কাছে যোগব্যায়ামের উপকারিতা কীভাবে পৌঁছে দেওয়া যায়, তা নিয়ে ভাবতে থাকেন। ২০১০ সালে ধানমন্ডিতে ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারে প্রথম শেখেন যোগব্যায়াম। তবে এর আগে বাবা রাম দেবের বই ও ভিডিও দেখে শেখেন। ২০১৭ সালে ‘ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী মেন-চ্যানেল আই হিরো, পাওয়ার্ড বাই বাংলাদেশ আর্মি’ প্রতিযোগিতায় সেরা ছয় নির্বাচিত হন তিনি। এরপর যান হরিদ্বারে, রাম দেবের আশ্রমে। সেখানে কিছু প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ফিরে প্রফেশনালি শুরু করেন কাজটি।
এরপর করোনাকালে বাংলাদেশ পুলিশ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাদের মধ্যে যাঁরা প্রতিনিয়ত অসুস্থ হচ্ছেন, তাঁদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে যোগব্যায়াম শেখানো হবে। ২০২০ সাল থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে অফিশিয়ালি ইয়োগা শেখানো শুরু করেন বাপ্পা শান্তনু। টানা এক বছরে শিখিয়েছেন প্রায় তিন হাজার পুলিশ সদস্যকে। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, আরও অনেক কিছু করার আছে। ইচ্ছে আছে যোগব্যায়ামের ওপর আরও একটি মাস্টার্স করার।’
জীবনে যাপনে
‘২০০৮-০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত এক দিনও আমি যোগব্যায়াম অনুশীলন না করে থাকিনি। সেটা আমি যেখানেই থাকি না কেন।’ নিজের জীবনে যোগব্যায়ামের প্রভাব সম্পর্কে এ তথ্য জানান বাপ্পা শান্তনু। খাবারদাবারের ক্ষেত্রে সব ধরনের খাবারই খান, কিন্তু পরিমিত। এতে পেট একটু ফাঁকা থাকে। তিনি বলেন, ‘আমাদের একেকজনের পাকস্থলীর ভলিউম একেক রকম। ফলে কাপ মেপে খাবার খেলেই হবে না; কতটুকু খাবেন, তা নিজেকেই বুঝতে হবে। খাওয়ার সময়ই বুঝতে পারবেন, কখন পেট ভরে উঠছে। পেট পুরোপুরি ভরা যাবে না। একটু ফাঁকা থাকতে হবে।’
আয়ুর্বেদের নিয়ম অনুযায়ী তিনি খাবার খাওয়ার ৯০ মিনিট পর পানি পান করেন। এটা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে ভীষণভাবে সহায়ক বলে জানান বাপ্পা।
ভালো থাকার সঙ্গে যোগব্যায়ামের সম্পৃক্ততা
২০০৮-০৯ সালে বাপ্পা জন্ডিসে আক্রান্ত হন। জন্ডিস সারার পরও প্রচণ্ড গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগতেন। ওষুধও খুব একটা কাজ করছিল না। হজমক্ষমতা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল প্রায়। তখন নিয়মিত যোগব্যায়াম অনুশীলন শুরু করেন। অনুশীলন করতে করতে দুই মাসের মধ্যে তাঁর গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা একটু একটু করে দূর হতে শুরু করে। তখন থেকে বাপ্পা পুরোদস্তুর যোগব্যায়াম শুরু করেন। সে সময় চুলও পড়ছিল তাঁর। টেনশন কমানোর কথা বললেন চিকিৎসক। কিন্তু টেনশন কীভাবে কমাতে হবে, তা তো কেউ বলেনি। শান্তনু সেটা খুঁজে পান যোগব্যায়ামে। তিনি বলেন, ‘যোগব্যায়াম মন নিয়ন্ত্রণ করে। যে যত ভালো অনুশীলন করবে, সে তত উপকার পাবে। যোগব্যায়াম শরীর ও মন—দুটোই ভালো রাখে।’