নওগাঁ শহর থেকে র্যাব আটকের পর সুলতানা জেসমিন (৪৫) নামে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় ময়নাতদন্ত রিপোর্ট তলব করেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ওই নারী র্যাবের কোন কর্মকর্তার অধীনে ছিলেন তাদের নামের তালিকাও আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে এ প্রতিবেদন দাখিলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেল সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
গত ২২ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় নওগা শহরের নওযোয়ান মাঠের সামনে থেকে সুলতানা জেসমিনকে আটক করে র্যাব। এরপর ২৪ মার্চ সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারীর মৃত্যু হয়। সুলতানা জেসমিন সদর উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সহকারী পদে চাকরি করতেন।
তার মৃত্যুর বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সোমবার ওই প্রতিবেদনগুলো আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। পরে হাইকোর্ট প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পোস্টমর্টেম প্রতিবেদন এবং সংশ্লিষ্ট র্যাব কর্মকর্তাদের তালিকা দাখিলের বিষয়ে আদেশ দেন। এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুলতানা জেসমিন শহরের জনকল্যাণ মহল্লায় ভাড়া থাকতেন। ২২ মার্চ সকালে প্রতিদিনের মতো অফিসে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে রওনা হন সুলতানা জেসমিন। পথে সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের নওযোয়ান মাঠের সামনে পৌঁছালে সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাসে এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায় র্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পের সদস্যরা। প্রায় ২ ঘণ্টা পর তাকে অসুস্থ অবস্থায় নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে র্যাব। সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত চিকিৎসাধীন থাকার পর অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে মারা যান সুলতানা জেসমিন।
সুলতানা জেসমিনের মামা নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক মন্টু বলেন, সুলতানা শুক্রবার মারা গেলেও পরদিন তার পোস্টমর্টেম করে আমাদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে র্যাব। মরদেহ দাফন হওয়া পর্যন্ত র্যাব প্রকাশ্যে এবং গোপনে আমাদের চারিদিকে অবস্থান করে। তিনি বলেন, সুলতানাকে সকালে তুলে নেয় র্যাব। দুপুরেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। এ সময়ের মধ্যে তার ওপর নির্যাতন চালানো হতে পারে।