মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠক ছিল পাকিস্তানি সামরিক জান্তার সাজানো খেলা। ২৫ মার্চ ১৯৭১ অপরাহ্নে কার্যত বৈঠক ভেঙে গণহত্যার সবুজ সংকেত দিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানে পাড়ি জমান ইয়াহিয়া খান। আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে এমন একটা গুঞ্জন ঢাকার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল। যে কোনো সময় কারফিউ হতে পারে আশঙ্কায় লোকজন দ্রুত ঘরে ফিরতে শুরু করল। এরূপ অবস্থায় সাধারণ মানুষ কিছুটা সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে এবং সামরিক আইন আরও কঠোর হতে পারে, কারফিউ অমান্য করলে এলোপাতারি গুলি চলতে পারে ইত্যাদি আশঙ্কায় শঙ্কিতবোধ করল; কিন্তু তাদের সামনে যে গণহত্যা ঘনিয়ে আসছে এতদূর কেউ ধারণা করতে পারল না। বিভিন্ন ঘাঁটিতে নিযুক্ত সিনিয়র পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক অফিসার ছাড়া এ পরিকল্পনার কথা আর কারও জানার উপায় ছিল না।
ঢাকায় কর্মরত পশ্চিম পাকিস্তানি সেনা অফিসার সিদ্দিক সালিকের গ্রন্থে পাকিস্তানি সৈন্যদের গণহত্যার প্রস্তুতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। তিনি লিখেন, ‘২৫ মার্চ মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন যখন রাজনৈতিক আলোচনার সম্ভাব্য পরিণতি নিয়ে গভীর চিন্তামগ্ন ছিলেন, ঠিক সে সময় সকাল ১১টায় তার সবুজ টেলিফোনটি বেজে উঠল। অপর প্রান্তে ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান। তিনি বললেন, ‘খাদিম, আজ রাতেই’।