ফলস অ্যালার্ম ও অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ মহড়া

জাগো নিউজ ২৪ ড. মো. ফখরুল ইসলাম প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০২৩, ০৯:৫১

বসন্তের ‘হানামি’ বা চেরীফুল ফোটার মৌসুমে ছুটির দিনে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে বেশ মজা করা হয়েছিল। রাতে আরেক অনুষ্ঠানে যেতে হবে। সারাদিন লম্বা ড্রাইভ করে চেরী বাগান ঘুরে বহু দূরের ওপেন লেকে মাছ ধরে সবাই ক্লান্ত। মাছের বারবিকিউ রাতের খাবারের একটি মেন্যু। কিন্তু বাইরে হঠাৎ ঝির ঝির বৃষ্টি ও ঠান্ডা বাতাস বইতে শুরু করলে ক্যাম্পাসের চেরীতলার স্পট পরিত্যাগ করে সবাই আমাদের ডর্মের দ্বিতীয় তলার হলঘরে গিয়ে উঠলাম। সেখানে ফ্রি চুলায় রান্নাসহ সব ব্যবস্থা ছিল।


সবাই খুব ব্যস্ত হয়ে রান্না-বান্নার কাজে মনোযোগ দিয়েছিল। বিদেশের ওসব পার্টিতে কারও বাবুগিরি করা চলে না। সবাই খুশিমনে সব কাজে অংশ নেওয়ার নিয়ম। রান্না শেষে খাবার সাজানো হয়েছে। এমন সময় ডর্মের ‘ফায়ার অ্যালার্ম’ বেজে উঠলো। বেশ কর্কশ স্বরে একবার, দুবার নয়- তিনবার বাজতে লাগলো। উপরের তলায় কোথাও আগুন লেগেছে এই ভেবে সবাই দ্রুত হলঘর থেকে বের হয়ে বাইরের পার্কিং লটে চলে গিয়েছিলাম।


সেখানে গিয়ে কিছুক্ষণ পর জানা গেলো আমাদের ভবনে আগুন লাগেনি। আমাদের মাছ বারবিকিউ করার চারকোলের অতিরিক্ত ধোঁয়ায় একজস্টর চালু করে না দেওয়ায় বদ্ধ কিচেনের ‘ফায়ার এক্সটিংগুইশার’মেশিন আগুনের ধোঁয়া আঁচ করে গোটা ভবনে জরুরি অ্যালার্ম বাজিয়ে সবাইকে আগুনের সতর্কবার্তা পৌঁছে দিয়েছে। সবাই জরুরি নির্গমন পথ অনুসরণ করে নিরাপদে নিচে চলে গেছে।


তখন মনে হয়েছিল- কত সেনসেটিভ ওদের ‘ফায়ার এক্সটিংগুইশার’মেশিন! একটু বেশিমাত্রার ধোঁয়ার সন্ধান পেলে আর রক্ষা নেই। সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যালার্ম দিয়ে সবাইকে সতর্ক করে দেয়। এই মেশিন জাপানের সব ভবনের সব ঘরেই লাগানো থাকে। শুধু দাউ দাউ আগুন নয়, ধোঁয়ার সূত্রপাত হলেই সেগুলো বেজে উঠে সবাইকে সতর্ক করে দেয়, যা হোক, যারা ওই বছর নতুন গিয়েছিল আমাদের ক্যাম্পাসে তারা অ্যালার্ম শুনে অনেকটা ভয় পেয়েছিল। আমরা যারা পুরোনো বাসিন্দা ছিলাম তারা এরকম ফায়ার অ্যালার্ম অনেকবার শুনেছি। যেগুলো ছিল সতর্কতামূলক মহড়া মাত্র। পরে সে রাতে আমাদের পার্টি ঠিকমতোই শেষ হয়েছিল।


গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার গুলশানের একটি আধুনিক বহুতল আবাসিক ভবনের ৭ম তলায় আগুনের সূত্রপাত। সে আগুন উপরের দিকে ছড়িয়ে গেলে ১২ তলা থেকে দুজন লাফিয়ে নিচে পড়লে মারা যান। ওই অগ্নিকাণ্ডে শিশুসহ ২২ জন আহত হন। জানা গেছে, সেই ভবনটিতে আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল। জরুরি নির্গমন পথ ছিল। ‘ফায়ার অ্যালার্ম’ দেওয়ার মতো ওদের ‘ফায়ার এক্সটিংগুইশার’মেশিন প্রতিটি ফ্লোরে লাগানো ছিল। তবে অনেকে ফায়ার অ্যালার্ম শোনেননি।


যারা শুনেছিলেন তারা ভেবেছে সেটা ছিল ‘ফলস্ ফায়ার অ্যালার্ম’! অথবা রাস্তা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স জরুরি অ্যালার্ম বাজিয়ে সব সময় যাতায়াত করে। সেরকম কিছু একটার শব্দ হতে পারে। তাই তারা অ্যালার্মের গা করেননি। আর এরকম একটি আধুনিক ভবন যেখানে কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে অগ্নিকাণ্ডের সময় বাইরে না বেরিয়ে ঘরের ভিতর বসে থাকাই ভালো! অর্থাৎ, আধুনিক যন্ত্রপাতি লাগানো হলেও সেগুলোর ব্যবহার বিধি সম্পর্কে সচেতনতামূলক জ্ঞান তাদের সবার মধ্যে ছিল না। তাই তো একজন বাবুর্চি ও একজন গৃহকর্মী জরুরি নির্গমন পথ দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা না করে আতঙ্কে ১২ তলার বেলকুনি থেকে নিচে লাফিয়ে পড়ে মারা গেছেন।


সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us