অবহেলিত উত্তরাঞ্চলের পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ শিল্পায়ন না হওয়া। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ না থাকায় এ অঞ্চলে যেমন পর্যাপ্ত কলকারখানা গড়ে ওঠেনি, তেমনি ব্যাহত হতো কৃষিকাজও। বিশেষ করে সেচ মৌসুমে বড় ধরনের সংকট তৈরি করে ডিজেলের ঘাটতি আর বিদ্যুতের লোডশেডিং। দূরত্বের কারণে নৌ ও রেলপথে চট্টগ্রাম থেকে উত্তরের জেলাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন তেল সরবরাহ করা দুরূহ ও ব্যয়বহুল। বড়পুকুরিয়া ছাড়া বড় কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র না থাকায় এ অঞ্চলের চাহিদা পূরণ করা হয় দেশের মধ্যাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে বিদ্যুৎ এনে। দূর থেকে বিদ্যুৎ আসায় লো ভোল্টেজ সমস্যায় ব্যাহত হয় সেচ কার্যক্রম।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি সেচ মৌসুম থেকে এসব সমস্যা আর তেমন থাকবে না। কারণ, ভারত থেকে পাইপলাইনে ডিজেল আসা শুরু হয়েছে। সেচকাজের পাশাপাশি সৈয়দপুরের ১৫০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রও চলবে এই ডিজেল দিয়ে। একই সঙ্গে ভারত থেকে আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎও আসছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ দিয়ে। ফলে উত্তরের ১৬ জেলায়, বিশেষ করে রংপুর বিভাগের আট জেলায় জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ঘাটতি অনেকটাই কমে আসবে। নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের কারণে নিশ্চিত হবে জ্বালানি নিরাপত্তা।
গত শনিবার বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের উদ্বোধন করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। ১৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পাইপলাইনে ভারতের আসামের নুমালীগড় রিফাইনারি থেকে ডিজেল আসছে। এখন বছরে তিন লাখ টন ডিজেল আসবে পাইপলাইনে, যা পর্যায়ক্রমে ১০ লাখ টনে উন্নীত হবে।
বিপিসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগে খুলনা ও চট্টগ্রাম থেকে রেল ওয়াগনের মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলে তেল আসতে সময় লাগত ৬-৭ দিন। ওয়াগন সংকট, ধর্মঘট নানা কারণে প্রায়ই এই সরবরাহ ব্যাহত হয়। পাইপলাইনে ডিজেল আসায় সময় বাঁচবে। পাশাপাশি পরিবহন খরচও কমবে।
নীলফামারী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সফিকুল আলম বলেন, পিছিয়ে পড়া এ অঞ্চলে এখন শিল্পবিপ্লব হবে। অনেক উদ্যোক্তা ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। অনেকে পরিকল্পনা করছেন। তিনি বলেন, উত্তরে প্রচুর সবজি হয়। সঙ্গে অন্যান্য ফসলও হয় রেকর্ড পরিমাণে। এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো ও শ্রমিক মজুরিও অনেক কম। নিরবচ্ছিন্ন তেল ও বিদ্যুৎ পেলে এখানে কৃষিভিত্তিক বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। উদ্যোক্তারা আগ্রহী হবেন। হাজার হাজার