ছোটবেলা থেকেই বরফে ঢাকা হিমালয়, এর সর্বোচ্চ চূড়া মাউন্ট এভারেস্ট, হিলারি-তেনজিং নোরগের এভারেস্ট জয়ের গল্পে মজে গিয়েছিলাম। আর হিমালয় নিয়ে নানা লেখা পড়তে পড়তে একসময় ইয়েতির কথাও জেনে গেলাম। ইয়েতি নিয়ে বই-পত্রিকায় যত পড়লাম, তত আবিষ্কার করলাম ইয়েতি হলো এক হিসাবে হিমালয়ের সবচেয়ে বড় রহস্যগুলোর একটি, যার জট ছোটাতে পারেননি কেউ। আর এতে এর প্রতি আগ্রহটা আরও ডালপালা মেলল। চলুন তাহলে কিছু সময়ের জন্য হারিয়ে যাই হিমালয়ের বরফরাজ্যে, ইয়েতির খোঁজে।
ইয়েতির মূল কাহিনি শুরুর আগে বরং ইয়েতি নিয়ে আমাকে আগ্রহী করে তুলতে ভূমিকা রাখা দুটি বইয়ের ব্যাপারে দু-চার কথা লিখি। শুরুতেই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘পাহাড়চূড়ায় আতঙ্ক’। কাঠমান্ডু থেকে ছোট্ট এক উড়োজাহাজে চেপে কাকাবাবু ও সন্তু চলে যায় হিমালয়ের দুর্গম এক এলাকায়। আমাদের বাসার ডাইনিং রুমের ছোট্ট খাটটায় শুয়ে স্কুলপড়ুয়া আমি ভরদুপুরে, প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও যেন সন্তুর সঙ্গে শীতে কাঁপছিলাম, কান পাতলেই যেন শুনতে পাচ্ছিলাম হিমবাহ পতনের কান ফাটানো আওয়াজ। কাকাবাবুর খুব সাবধানে আগলে রাখা ছোট্ট বাক্সের দাঁতটা কি তবে ইয়েতির? বরফের পাহাড়ের আড়ালে একমুহূর্তের জন্য দেখা যাওয়া ওই বিশাল ছায়ামূর্তিটা কী? শেষ পর্যন্ত কি ওরা দেখা পাবে ইয়েতির? এমন সব প্রশ্ন মাথায় নিয়ে উত্তেজনায় টগবগ করছিলাম।
তারপর আসে আনন্দ পাবলিশার্স থেকে বের হওয়া টিনটিন ইন টিবেটের অসাধারণ অনুবাদ ‘তিব্বতে টিনটিন’। বিমান দুর্ঘটনায় নিখোঁজ এক বন্ধুর খোঁজ করতে ক্যাপ্টেন হ্যাডক ও কুকুর স্নোয়ি বা কুট্টুসকে নিয়ে টিনটিন যায় তিব্বতে। রোমাঞ্চকর সেই অভিযানের পরতে পরতে ধোঁয়াশা ছড়িয়েছে ইয়েতি। সেই সঙ্গে ইয়েতিতে আরও বেশি করে মজে যাই আমি।