ঠান্ডা লেগে গলা ব্যথা, গলা জ্বালা হওয়া খুবই সাধারণ ব্যাপার। আবার অ্যাসিডিটির প্রভাবেও গলা-বুক জ্বালা হতে পারে। সাধারণত খাওয়াদাওয়ার অনিয়ম, অস্বাস্থ্য়কর খাবার এবং অতিরিক্ত তেলমসলার প্রভাবে পাকস্থলীতে এই অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। এই অ্যাসিড পাকস্থলীর কপাটিকা থেকে সোজা খাদ্যনালীতে চলে আসে। এই কারণেই গলা ও বুক জ্বলতে থাকে। এছাড়াও আরও অনেক কারণে গলা জ্বালার সমস্যা হয়। যেমন - দূষণ, অতিরিক্ত গরম খাবার বা পানীয়, মসলাদার খাবার,অ্যাসিডিটি, গলায় সংক্রমণ, আলসার, খাবার থেকে অ্যালার্জি।
গলা জ্বালার সমস্যা কমাতে ঘরোয়া কিছু সমাধান বেছে নিতে পারেন। যেমন-
মধু: সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন অনুসারে, মধু গলায় জ্বালাপোড়ার সমস্যা কমাতে দারুণ কার্যকর। মধুতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য গলায় জ্বালাপোড়া সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসকে মেরে ফেলে। গলা জ্বালাভাব কমাতে সরাসরি দুই চা চামচ মধু খেতে পারেন অথবা গরম হার্বাল চায়ের সঙ্গে মিশিয়েও মধু সেবন করতে পারেন।
গরম পানি দিয়ে কুলিকুচি: গলা ব্যথা বা গলায় জ্বালা হলে এক কাপ গরম পানিতে সামান্য লবণ মিশিয়ে কুলিকুচি করুন। লবণ ব্যবহারে গলার টিস্যু থেকে তরল নির্গত হয়, যা ভাইরাস এবং কফ অপসারণে সহায়তা করে। এ ছাড়াও, গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুচিকুচি করলে অ্যাসিড উৎপাদন হ্রাস করে এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল অস্বস্তিও কমায়। এ কারণে গলার অস্বস্তি কমাতে দিনে বেশ কয়েকবার কুলিকুচি করুন। আর অবশ্যই পর্যাপ্ত পানি পান করুন। এতে শরীর হাইড্রেট থাকে এবং গলায় জ্বালাপোড়ার সমস্যাও কমে।
ঠান্ডা দুধ: পেট এবং গলা জ্বালাপোড়ার জন্য সেরা প্রতিকার হল এক গ্লাস ঠান্ডা দুধ। দুধে প্রচুর পরিমাণে ইলেক্ট্রোলাইট এবং ক্যালসিয়াম রয়েছে। এই দুই উপাদানই পানিশূন্যতা এবং হজমের সমস্যা কমাতে পারে। গলা ব্যথা কমাতে খুবই কার্যকর ঠান্ডা দুধ।
পুদিনা পাতা: পুদিনা পাতায় অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণাগুণ রয়েছে। পুদিনার এই গুণই ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক এবং ভাইরাস মেরে ফেলতে পারে। এ ছাড়া অ্যাসিডিটি কমাতেও পুদিনা পাতা সাহায্য করে। পুদিনা পেটে অ্যাসিডের উৎপাদন কমায়।
এছাড়াও এমন কিছু খাবার এবং পানীয় রয়েছে যা গলায় জ্বালাপোড়া উপশমে দারুণ কাজ করে। গলায় জ্বালাপোড়া ভাব কমাতে ডিমের সাদা অংশ, দই, আদা, ওটস জাতীয় খাবার এবং শাকসবজির স্যুপ, শাকসবজির স্মুদি, নন-ক্যাফিনযুক্ত পানীয় খেতে পারেন। এক কাপ গরম চায়ে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। যাদের এ ধরনের সমস্যা আছে তাদের ধূমপান, অ্যালকোহল, গরম মসলাদার বা অ্যাসিডিক খাবার, কফি, চা এবং জাঙ্ক ফুড না খাওয়াই ভালো। পাশাপাশি ধূলা ময়লা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।