সুন্দরবন রক্ষায় কী করছে বন বিভাগ

প্রথম আলো প্রকাশিত: ২১ মার্চ ২০২৩, ০৮:৩৪

মাঘী পূর্ণিমার দুই দিন পর, বেলা সোয়া দুইটা হবে। সুন্দরবনের কটকার খালের পূর্ব দিকে দুটি ছোট মাছ ধরা নৌকা দেখে এগোনো। কিছুটা সামনে এগোতে চোখে পড়ে আরও চারটি নৌকা। এরই মধ্যে সরু খালের মুখে একটি নৌকা দেখা গেল। কাছে যেতেই নৌকা নিয়ে সাগরমোহনার দিকে ছুটতে থাকেন কয়েকজন জেলে। কী করছিলেন বা কী মাছ পেলেন—এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে চলে গেলেন তাঁরা।


মূলত সুন্দরবনের এ এলাকা অভয়ারণ্যের অন্তর্ভুক্ত। সেখানে মাছসহ সব ধরনের বনজ সম্পদ আহরণ করা নিষিদ্ধ। ওই দিন রাতে জোয়ার শুরুর আগে কটকা খাল দিয়ে বনের শেলা নদীর দিকে এগোতেই আবারও কয়েকটি জায়গায় দেখা গেল জেলেদের। অভয়ারণ্য এলাকায় অন্তত নয়টি স্থানে দেখা গেল চরপাতাজাল পাততে।


পূর্ণিমায় মাছ বেশি পাওয়া যায় জানিয়ে বনের ভেতরের নদী ও খালে আড়াআড়ি জাল ফেলে মাছ ধরা হয় বলে জানালেন তিনটি পর্যটক বোটের তিনজন মাস্টার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাঁরা বলেন, পরিচয় প্রকাশিত হলে তাঁরা সুন্দরবনে কাজ হারাবেন, তাঁদের কোম্পানিও বিপদে পড়বে। তবে বন বিভাগকে টাকা দিলে অবাধে অভয়ারণ্যেই মাছ ধরা যায়।


অভয়ারণ্য এলাকায় মাছ শিকারের পাশাপাশি গোপনে পাখি শিকারও হয় বলে অভিযোগ আছে। সুন্দরবন রক্ষায় বন বিভাগ কী করছে, সে প্রশ্নও করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। গত ৪ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবনের সুপতি খালে জেলের একটি নৌকায় দেখা মেলে পাখি শিকারের দৃশ্য। ‘বড় কুবো’ একটি পাখি ধরে তার পায়ে দড়ি বেঁধে অন্য পাখি আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছিলেন এক তরুণ। নৌকার অন্য জেলারা তখন মাছ ধরছিলেন। পরে সেখান থেকে পাখিটি উদ্ধার করে বনের সুপতি স্টেশনে অবমুক্ত করা হয়।


বন বিভাগ বলছে, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার। এর মধ্যে ১৯৯৬ সালে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬৯৯ দশমিক ৪৯৬ হেক্টর এলাকাকে অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর ২১ বছর পর ২০১৭ সালে আরও ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৫০ দশমিক ৫৮৪ হেক্টর এলাকাকে নতুন করে অভয়ারণ্যভুক্ত করা হয়। সব মিলিয়ে বর্তমানে সুন্দরবনের অভয়ারণ্য এলাকা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ১৭ হাজার ৯৫০ দশমিক শূন্য ৮ হেক্টরে।


সুন্দরবনের রামপালের পেড়িখালীর জেলে আহম্মদ হোসেন বলেন, নিষিদ্ধ এলাকা বাড়িয়ে লাভ হলো কী? সেখানে আগের মতোই মাছ শিকার চলছে। অবশ্য এতে লাভ হচ্ছে বন বিভাগের আর নেতাদের।


অভয়ারণ্য এলাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জে ৯১ হাজার ৬৯৩ দশমিক ৯৬২ হেক্টর এলাকা, যার অন্যতম কটকা। ১৯৯৬ সালে বনের এই এলাকাকে অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়। সুন্দরবনের আয়তনের শতকরা ৫০ ভাগের বেশি এখন অভয়ারণ্যভুক্ত উল্লেখ করে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের সদর সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, সুন্দরবনের অভয়ারণ্য থেকে সব ধরনের বনজ সম্পদ আহরণ নিষিদ্ধ। এতে বনের ওপর মানুষের চাপ অনেকটা কমেছে। ফলে বন্য প্রাণী, জলজ প্রাণী, গাছপালাসহ সব ধরনের বনজ সম্পদ বৃদ্ধি পাবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us