তিন দিনের ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্রের দুই ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধের পর বিশ্বজুড়ে কিছু ব্যাংকের শেয়ারের দরপতন হয়েছে ব্যাপকভাবে। বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতিতে এই পতনের ফল কতটা খারাপ? অন্যদের জন্য এটা কী বার্তা দিচ্ছে?
স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট যখন ব্যাংক গ্রাহকদের আমানত নিরাপদ বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেন, তার মানে আর্থিক এই সংকটকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার গুরুত্বের সঙ্গেই নিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে আশ্বাস দিয়েছেন, তা কেবল ধসে পড়া দুটি ব্যাংকের গ্রাহকদের জন্যেই নয়। ব্যাংক দুটির পতনে যুক্তরাষ্ট্রসহ গোটা বিশ্বেই এর সম্ভাব্য প্রভাব রয়েছে।
কিন্তু হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ও সিগনেচার ব্যাংক বন্ধ করতে হল কেন, সেই কারণ ও প্রভাব অনুসন্ধান করতে গিয়ে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে বিবিসি।
ব্যাংক বন্ধের কারণ কী
বিশেষ করে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে ঋণ দেওয়া সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক গত ১০ মার্চ বন্ধ ঘোষণা করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্সিয়াল প্রটেকশন অ্যান্ড ইনোভেশন। এরপর ব্যাংকের সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নেয় ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশন (এফডিআইসি)।
ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক এই ব্যাংক বন্ধের ঘটনাকে বলা হচ্ছে ২০০৮ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং খাতের সবথেকে বড় পতন। বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার মধ্যে ২০০৮ সালে পতন ঘটেছিল ওয়াশিংটন মিউচুয়াল ব্যাংকের, যার সম্পদমূল্য ছিল ৩০৭ বিলিয়ন ডলার।
সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের চাকা ঘোরা বন্ধ হতে থাকে ব্যাংক বন্ধের দুদিন আগে থেকে। সেসময় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এক ঘোষণায় জানায়, কিছু সম্পদ বিক্রি করে তাদের ১৮০ কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে। ব্যালেন্স শিট শক্তিশালী করতে ২২৫ কোটি ডলারের নতুন শেয়ার বিক্রি করবে তারা।
ওই ঘোষণার পর প্রধান কোম্পানিগুলোর মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। গ্রাহকরা ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ তুলে নিলে ব্যাংকটি অর্থ সংকটে পড়ে যায়। সিলিকন ভ্যালি ফাইন্যান্সিয়াল গ্রুপের শেয়ারের দাম পড়ে যায় ৬০ শতাংশ।
ব্যাংকটি যেদিন বন্ধ ঘোষণা করা হয়, সেদিনও পুঁজিবাজার খোলার আগে ৬০ শতাংশ দরপতন হয় শেয়ারের। ফলে দুই দিনে দরপতন হয় ৮৪ শতাংশ।
বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে সবমিলিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ১০ মার্চ সকালে ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ করে নিয়ন্ত্রণ নেয় ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্সিয়াল প্রটেকশন অ্যান্ড ইনোভেশন।