সদিচ্ছা থাকলে ‘সমাবর্তনজট’ থাকবে না

সমকাল আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রকাশিত: ১৭ মার্চ ২০২৩, ০০:৩০

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সমকালে প্রকাশিত প্রধান প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ১০৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৮টিতে প্রতিষ্ঠার ১১ বছরেও সমাবর্তন হয়নি। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর ৪ বছর পরই সমাবর্তন হওয়ার কথা। সেখানে এক দশক পার করার পরও সমাবর্তন না হওয়া দুঃখজনক। শুধু যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই অবস্থা, তা কিন্তু নয়। কোনো কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও সমাবর্তনজট দেখা যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নানা যুক্তি সামনে আনছে। যেভাবেই তারা ব্যাখ্যা করুক; প্রকৃত সত্য হচ্ছে– সমাবর্তন হচ্ছে না। নানাজনের নানা মন্তব্যের সহজ জবাব– প্রতিবছর সমাবর্তন হতে হবে। কোনো কারণে সম্ভব না হলে পরের বছর তা সম্পন্ন করতে হবে।


বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করার পর কোনো কোনো শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা বা চাকরির জন্য বিদেশে চলে যায়। পরের বছর সমাবর্তন করতে গেলে তাদের কেউ কেউ যোগ দিতে পারে না। এ তো গেল এক বছর বিরতি দেওয়ার কুফল। ৪-৫ বছর বিরতি দিয়ে সমাবর্তন করা হলে অনেককেই পাওয়া যাবে না। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ বছর সমাবর্তন হচ্ছে না; তারা যদি এখন সমাবর্তন করতে চায় এবং প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়, তাহলে দেখা যাবে অনেকেই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এসেছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আসাটা দোষের কিছু নয়। তবে সন্তানের কাছে ভুল বার্তা যাবে। তারা ভাবতে পারে, স্নাতকোত্তর শেষ করার ১০ বছর পরে বুঝি আনুষ্ঠানিক ডিগ্রি গ্রহণ করতে হয়।


বিশ্ববিদ্যালয় একজন শিক্ষার্থীর মধ্যে পরবর্তী জীবনের নিয়ম-শৃঙ্খলা তৈরি করে দেয়। একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করে সমাবর্তনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ডিগ্রি গ্রহণ করবে– এটি তার অধিকার। কিন্তু যারা সেই অধিকার খর্ব করছে, তাদের ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের হস্তক্ষেপ করা উচিত। না হলে শিক্ষার্থীর কর্মজীবনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। সময়মতো কাজ শেষ করার মানসিকতা তার মধ্যে সৃষ্টি করে দিতে হলেও সঠিক সময়ে তার হাতে আনুষ্ঠানিক ডিগ্রি তুলে দেওয়া দরকার।


পশ্চিমা দেশে একজন শিক্ষার্থী যেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, সেদিনই তার হাতে ৪ বছরের একাডেমিক ক্যালেন্ডার দেওয়া হয়। অর্থাৎ ভর্তির দিনই সে জানতে পারে, কবে তার সমাবর্তন অনুষ্ঠান। আমাদের দেশে ভর্তির দিন সম্ভব না হলেও অনার্স-মাস্টার্সের রেজাল্টের দিন অন্তত তারিখটি জানিয়ে দেওয়া যায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মহামারির কারণে বিধিনিষেধ থাকলে তা ভিন্ন কথা। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে সমাবর্তন আটকে রাখার বাস্তবতা দেখি না।


কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত সমাবর্তন না হওয়ার দায় যেমন সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের; তেমনি এ দায় সবার। মন্ত্রণালয়, ইউজিসি– কেউ এ দায় এড়াতে পারে না। গ্র্যাজুয়েটের অধিকার আটকে রাখার দায় থেকে মুক্তি পেতে হলে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবারই জানার কথা– কেন তাদের সমাবর্তন আয়োজন করা যাচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য একই সঙ্গে রাষ্ট্রপতি হওয়ায় তিনি সব সমাবর্তনে উপস্থিত না-ও থাকতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রীকে মনোনীত করতে পারেন। এমনকি উপাচার্যকেও মনোনীত করতে পারেন। সুতরাং আচার্য সময় দিতে না পারলে সমাবর্তন করা যাবে না– এ ধরনের যুক্তি অবান্তর।


সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us