চাষিরা যেন তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য পায় তা নিশ্চিত করতে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামীকাল বৃহস্পতিবার বন্ধ হচ্ছে পেঁয়াজ আমদানি। এই সিদ্ধান্তে কৃষকেরা খুশি হলেও ক্রেতা-ভোক্তারা অস্বস্তিতে আছেন। অনেকে মনে করছেন, এর ফলে রমজান সামনে রেখে সিন্ডিকেটের হাত ধরে দেশে পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে।
এদিকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের আগের দিন আজ বুধবার বন্দর এলাকায় পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম দুই থেকে চার টাকা বেড়ে গেছে। হিলি কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ গতকাল মঙ্গলবার পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়েছে ১৮ থেকে ২০ টাকায়। তবে একদিনের ব্যবধানে আজ বুধবার ২২ থেকে ২৪ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।
জানা গেছে, দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ উৎপাদন ও দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকায় গত দুই মাস ধরে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ অনেকাংশে কম। বর্তমানে বেনাপোল বন্দর এলাকার খোলা বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ২৬ টাকায় এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ২৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে ভোমরা স্থলবন্দর এলাকায় পেঁয়াজের দাম অনেকটা বেশি। আজ বুধবার সাতক্ষীরার বড় বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভারতীয় পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২৮ টাকায়। আর খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা দরে। দেশি পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, আর খুচরা ৩৩ থেকে ৩৫ টাকায়।
যশোরের বেনাপোল এলাকার কৃষক আমিন হোসেন বলেন, ‘যখন দেশি পেঁয়াজ ওঠে, তখন ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি অব্যাহত থাকায় আমরা অনেক সময় উৎপাদন খরচ উঠাতে পারি না। আর কদিন বাদে ঘরে নতুন পেঁয়াজ উঠবে। এর আগে সরকার পেঁয়াজ আমদানি নিষিদ্ধ রাখায় আমরা খুশি।’
স্থানীয় ক্রেতা বরকত আলী বলেন, বর্তমানে পেঁয়াজের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। তবে প্রতিবার যেহেতু রমজানের সময় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দেয়, তাই সরকারের বাজার তদারকি জোরদার রাখতে হবে।
বেনাপোল বন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক শামিম হোসেন বলেন, চাহিদা কম থাকায় এবার রোজার আগে পেঁয়াজ আমদানির চিন্তা নেই। তবে যেহেতু চাহিদার তুলনায় দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন হয় না, তাই একেবারে আমদানি নিষিদ্ধ না করে কোটা নির্ধারণ করে সীমিত রাখলে দাম বাড়ার সম্ভাবনা কম থাকত।
বেনাপোল বন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী হেমন্ত কুমার সরকার বলেন, চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৯ হাজার ৮৮৭ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। ১৫ মার্চের পর থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকবে। যদি নতুন করে কোনো নির্দেশনা না আসে, তাহলে এরপর থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যাবে।