অনলাইন যোগাযোগের দুনিয়ায় স্পষ্ট ও সঠিকভাবে লেখাটা খুব জরুরি, তা সে মেইল, ব্লগ পোস্ট বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আপডেট– যাই হোক না কেন। লিখিত বার্তাটা হতে হবে সংক্ষিপ্ত, মিথস্ক্রিয়ামূলক এবং নির্ভুল। বাংলার মতো ভাষার ক্ষেত্রে এটি আরও বেশি প্রযোজ্য, যা কি না বিশ্বব্যাপী লাখো মানুষের মুখের ভাষা হওয়া সত্ত্বেও এর সাহায্যকারী ডিজিটাল টুলের সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়।
আর এই অপর্যাপ্ততা ঘোচাতেই আবির্ভাব হলো 'সঠিক'-এর। এটি বাংলাভাষী লেখকদের জন্য ক্লাউডভিত্তিক এমন একটি সহায়ক মাধ্যম, যা বর্তমান সময়ে বাংলা লেখার গল্পটাই পাল্টে দেবে। বৈশ্বিক পরিসরে জনপ্রিয় রাইটিং টুল গ্রামারলির মতো সঠিক বানান, ব্যাকরণ, যতিচিহ্ন, লেখার স্পষ্টতা ইত্যাদি বিষয় দেখে ভুল খুঁজে বের করে এবং শোধরানোর বিভিন্ন পরামর্শ দেবে।
বাংলা ভাষার ব্যাকরণে নিজস্ব যে সব নিয়ম-নীতি আছে, যা নিজস্ব ভাষাভাষী বক্তা ও পেশাদার লেখকদের জন্যেও অনেক ক্ষেত্রে বেশ কঠিন। ইংরেজি লেখকদের জন্য এত এত ডিজিটাল টুল থাকলেও বাজারে এর আগ পর্যন্ত বাংলার জন্য এমন কিছুই আসেনি। এই শূন্যস্থান পূরণ করতেই এসেছে সঠিক। এই সফটওয়্যারটি বাংলা লেখা স্ক্যানের পাশাপাশি সম্ভাব্য ত্রুটি শনাক্ত করতে মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম ব্যবহার করে থাকে। তাই ঝামেলাটা বানান নিয়ে হোক বা ক্রিয়ার কাল, যতিচিহ্ন– সঠিক সব সময়ই সঠিক পরামর্শ দিয়ে লেখালেখির মান আরও উন্নত করতে সক্ষম।
ঠিক মূলত আইসিটি বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ কম্পিউটারের 'এনহ্যান্সমেন্ট অব বাংলা ল্যাঙ্গুয়েজ ইন আইসিটি' বা 'আইসিটিতে বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি' শীর্ষক প্রকল্পের একটি উপজাত। এই সরকারি প্রকল্পটি ২০১৭ সাল থেকে চালু রয়েছে। বিশেষত 'স্পেল চেকার' বা বানান সংশোধনকারী ফিচারটির উন্নয়নকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি ঘটিয়ে বিশ্বমাধ্যমে এর বিশেষ স্থান তৈরি করা।
বাংলা ভাষায় লেখালেখি ও তা প্রকাশের সব রকম বাধাবিপত্তি দূর করাও এ প্রকল্পের আরেকটি লক্ষ্য। তাই সঠিক-এর পরিকল্পনা করা হয়ে একটি বাংলা কম্পিউটিং মডিউল হিসেবে। এবং এটি যাতে জনপরিসরে চাহিদা পূরণে সক্ষম হয়, সেটিও মাথায় রাখা হয়েছিল।