পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়েছে দীর্ঘ পরিকল্পনা করে। মালপত্র লুট করে নেওয়ার পর করা হয়েছে অগ্নিসংযোগ। পোড়ার ধরন দেখে মনে হচ্ছে, পেট্রোলের পাশাপাশি গানপাউডার ব্যবহার করা হয়েছে। তা না হলে ছাদ ঢালাই করা পাকা বাড়িও নিমেষেই পুড়ে যেত না। এসব কথা বলছেন ভুক্তভোগীসহ স্থানীয় লোকজন। পুলিশও বলছে এমন সন্দেহের কথা।
গতকাল বুধবার গিয়ে দেখা গেছে, চারদিকে পোড়া ঘরবাড়ি। ভাঙচুর করা ঘরবাড়ির টিনের চাল-বেড়া পড়ে আছে এদিক-সেদিক। বাতাসে পোড়া গন্ধ। আহমদিয়াপল্লি হিসেবে পরিচিত আহমদনগরে লোকজন নেই বললেই চলে। দু-চারজনের দেখা মিললেও অপরিচিত লোক দেখলেই আঁতকে ওঠেন তাঁরা।
সোনাচান্দি গ্রামের রফিক আফ্রাদ বলেন, ‘বাড়ির সব দামি জিনিস লুট করে নেওয়ার পর আগুন দেওয়া হয়েছে। আমাদের শেষ করে দিতেই এ হামলা চালানো হয়েছে। আমরা ভয়ে এলাকা ছেড়ে চলে গেলে আমাদের সহায়-সম্পত্তি দখল করার পাঁয়তারা করেছে দুর্বৃত্তরা।’
ফুলতলা বাজারে যে কয়েকটা বড় মুদি দোকান আছে, সেগুলোর একটি নুর উদ্দিন আহমেদের। হামলার সময় তাঁর দোকানের মালপত্র লুট করা হয়েছে। তাঁর প্রায় ২৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া ফুলতলা বাজারে নুর আলম, হাফিজুল ইসলাম, মোস্তাক আহমদসহ আরও কয়েকজনের দোকানের মালপত্র লুট করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আহমদনগরের বাসিন্দা মাহমুদ আহমেদ বলেন, পোড়ার ধরন দেখে মনে হচ্ছে, পেট্রোলের পাশাপাশি গানপাউডার ব্যবহার করা হয়েছে। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ঘরবাড়ি-ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আহমদিয়াদের সালানা জলসার আহ্বায়ক আহমদ তবশির চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের ওপর হামলা এক দিনের পরিকল্পনায় হয়নি। প্রথমে অন্য বাড়িগুলোতে সাদা কাপড় টাঙিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। যাতে আহমদিয়াদের বাড়ি চিনতে কষ্ট না হয়। এভাবে কৌশল করে আমাদের লোকজনের বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। হামলায় গ্রিল কাটা ও দেয়াল ভাঙারও যন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। যারা এসব করেছে, তারা প্রশিক্ষিত মনে হয়েছে।’