প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের অর্থ উদ্ধারে উদাসীনতা দেখাচ্ছে ব্যাংকগুলো। তারা ছোট ঋণ আদায়ে পাত্তা দিচ্ছে না, যার মূলে রয়েছে গ্যারান্টি স্কিমের শর্ত। গ্রাহক খেলাপি হলে শর্ত অনুযায়ী ব্যাংকগুলো ঋণের ৮০ শতাংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে পাবে। বাকি ২০ শতাংশ ব্যাংকগুলোকে বহন করতে হবে।
জানা গেছে, করোনার সময় ১০, ৫০ ও ১০০ টাকার হিসাবধারী ছোট উদ্যোক্তা, কৃষক ও ছোট ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে ঋণ বিতরণের স্বার্থে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২ হাজার কোটি টাকার একটি ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম গঠন করে। এ স্কিমের আওতায় ওই সব খাতে ঋণ দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গ্যারান্টি দেয়। গ্রাহক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে এর বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণের ৮০ শতাংশ গ্যারান্টি সুবিধা দেবে।
আজকের পত্রিকা অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের আওতায় প্রান্তিক ও ছোট উদ্যোক্তাদের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত খেলাপি হলে তার বিপরীতে মামলা না করেই গ্যারান্টির অর্থ পাবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো, যা আগের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ছিল ২ লাখ টাকা। এসব ক্ষুদ্র ঋণের অর্থ আদায়ে মামলা করতে ঋণের চেয়ে বেশি অর্থ খরচ হয় বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক্ষেত্রে নীতিমালা শিথিল করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, কৃষক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণ দিতে গ্যারান্টির মাধ্যমে পুনঃ অর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ঋণ দিতে ব্যাংকগুলোর আগ্রহ কম থাকায় এ গ্যারান্টি দেওয়া হয়। এতে ঋণ আদায়ের চেয়ে মুখ্য বিষয় হলো, উৎপাদন বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। যদি অনিয়ম ধরা পড়ে, তবে সেই ব্যাংকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রেডিট গ্যারান্টি বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, অংশীদারত্ব চুক্তি অনুযায়ী, ঋণ আদায় না হলে ব্যাংকগুলো মামলা করে গ্যারান্টির টাকা দাবি করে। তবে সম্প্রতি মামলা ছাড়া মন্দ ঋণের বিপরীতে গ্যারান্টি সীমা দুই লাখ থেকে বৃদ্ধি করে পাঁচ লাখ টাকা করায় গ্যারান্টির অর্থ পেতে আবেদন বেড়ে গেছে। এ কারণে ঋণের অর্থ আদায়ে উদাসীনতা দেখাচ্ছে ব্যাংকগুলো।