তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) খাতে ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছে দেশের ত্রিশটি কোম্পানি। বিগত এক দশকের মধ্যে শুরুর আট বছর এ খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল ২৫ থেকে ৭৯ শতাংশ পর্যন্ত। বাজার সমীক্ষায় এমন প্রবৃদ্ধি দেখেই বড় বড় কোম্পানি এ খাতে বিনিয়োগ করে। সবশেষ দুই বছর পাল্টে দিয়েছে সব হিসাব-নিকাশ। প্রবৃদ্ধি ঠেকেছে কিনারে। ২০২২ সালে এ খাতের প্রবৃদ্ধি মাত্র দশমিক ৬ শতাংশ। যা আগের বছরও ১৩ শতাংশ ছিল।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজির দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। একই সঙ্গে দেশে ডলার সংকট ও তেলের দাম বাড়ায় বেড়েছে পরিবহন খরচ। যা এ খাতকে খারাপ অবস্থায় ফেলছে। দাম সমন্বয় করতে গিয়ে দেশে বেড়েছে এলপিজি সিলিন্ডারের দাম। এতে আগের তুলনায় কমেছে সিলিন্ডারের চাহিদা।
এলপিজি খাতে দেশের অন্যতম কোম্পানি বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো এলপিজি। প্রতিষ্ঠানটির বাজার সমীক্ষার তথ্য বলছে, ২০১৩ সালে দেশে এলপিজির চাহিদা ছিল ৮০ হাজার টন। যা পরের বছর বেড়ে হয় ১ লাখ ৪০ হাজার টন। এর পরের বছর সর্বোচ্চ ৭৯ শতাংশ চাহিদা বেড়ে হয়েছিল আড়াই লাখ টন। এভাবে ক্রমাগত বেড়ে ২০২০ সালে এদেশে এলপিজির চাহিদা দাঁড়ায় ১২ লাখ ৩০ হাজার টন।
কিন্তু ২০২১ সালে প্রবৃদ্ধির ধারায় ধাক্কা লাগে। ওই বছর ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়, যা আগের বছরগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন। ওই বছর চাহিদা দাঁড়ায় ১৩ লাখ ৯৪ হাজার টনে। আর সবশেষ বছরে (২০২২) প্রবৃদ্ধি হয়েছে দশমিক ৬ শতাংশ হারে। চাহিদা ১৪ লাখ ২ হাজার টন।
কোম্পানির তথ্য বলছে, এখন দেশে প্রথম সারির এলপিজি কোম্পানি হচ্ছে বসুন্ধরা, ওমেরা, বিএম গ্যাস, যমুনা, ফ্রেশ, বেক্সিমকো, পোট্রোমাক্স, ইউনিগ্যাস ও জিএমআই। এই নয়টি কোম্পানির মার্কেট শেয়ার প্রায় ৮০ শতাংশ। অন্যদিকে ২০ শতাংশ বাজার দখল করে আছে আরও ২১টি কোম্পানি। তবে শীর্ষ কোম্পানিগুলোর মধ্যে এখন বেশ প্রতিযোগিতাপূর্ণ হয়েছে এ বাজার। কোনো কোম্পানির একক মার্কেট শেয়ার ১৫ শতাংশের বেশি নয়। একে আপরের খুব কাছাকাছি শেয়ার নিয়ে বাজারে লড়ছে। যেখানে এক দশক আগে বাজারে এ খাতে একটি কোম্পানির দখলে ছিল এক-তৃতীয়াংশ।