দেশে ও প্রবাসে হুন্ডি ব্যবসার বড় চাহিদা তৈরি করেছেন দেশ থেকে অবৈধ অর্থ পাচারকারীরা। পাচারকারীরাই মূলত হুন্ডি ব্যবসায়ীদের অর্থের জোগানদাতা। হুন্ডি ব্যবসায়ীরা প্রবাসীদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে পাচারকারীদের বিদেশের ব্যাংক হিসাবে জমা দেন। তাই বৈধ পথে প্রবাসী আয় বাড়াতে হলে হুন্ডি ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে।
রাজধানীর মতিঝিলে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে দেশের অর্থনীতির সামগ্রিক পর্যালোচনা’ তুলে ধরতে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সেমিনারে সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, শুধু প্রণোদনা দিয়ে প্রবাসী আয় বাড়ানো যাবে না। প্রবাসী আয় বাড়াতে হলে বন্ধ করতে হবে হুন্ডি ব্যবসা। কারণ, দেশের অর্থ পাচারকারী ও হুন্ডি ব্যবসায়ীরা একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করেন। অনেকে আশঙ্কা করছেন, নির্বাচনের বছর হওয়ায় এ বছর অর্থ পাচার বাড়তে পারে। তাই এই ব্যাপারে এখনই বাস্তবভিত্তিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ ছাড়া মুদ্রার বিনিময় হারের মধ্যে যথাযথ সমন্বয় জরুরি বলে মনে করেন সেলিম রায়হান। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে চার–পাঁচ ধরনের মুদ্রার বিনিময় হার রয়েছে। এগুলো সমন্বয় করা জরুরি।
ডিসিসিআই সভাপতি সামির সাত্তার বলেন, শুধু প্রণোদনা দিয়ে হুন্ডি ব্যবসাকে কোনোভাবেই মোকাবিলা করা যাবে না। প্রণোদনা বাড়ালে হুন্ডি ব্যবসায়ীরা আরও বেশি সুবিধা দেবেন।
এদিকে হুন্ডির কারণে যে বৈধ পথে প্রবাসী আয় আসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকেও বোঝা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরের অক্টোবর–ডিসেম্বর প্রান্তিকে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। অথচ প্রবাসী আয় আসার দিক থেকে শীর্ষে ছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব। সৌদি আরবে প্রায় ২০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি কাজ করেন। আর যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন প্রায় পাঁচ লাখ বাংলাদেশি। তা সত্ত্বেও সৌদি আরবের চেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। গত অক্টোবর–ডিসেম্বর প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে ৯৬ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলারের প্রবাসী আয়। আর সৌদি আরব থেকে এসেছে ৯১ কোটি ডলার।