‘চালের জন্য এমন যুদ্ধ আগে দেখি নাই’

প্রথম আলো প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৮:৩১

কেউ এসেছেন সকাল ছয়টায়, কেউ সাতটায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে রোদের তেজ। সেই রোদ উপেক্ষা করে খোলাবাজারে পণ্য বিক্রির (ওএমএস) ট্রাকের সামনে চালের জন্য অপেক্ষা কমপক্ষে চার শতাধিক মানুষের। ভিড়ের মধ্যে একপর্যায়ে লেগে যায় হট্টগোল। গরমে ভিড় ছেড়ে পাশের ফুটপাতেও বসে পড়েন অনেকে।


গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় এ চিত্র দেখা যায় চট্টগ্রাম নগরের সাগরিকার বিটাক মোড় এলাকায়। ভোগান্তি সয়ে হলেও চাল সংগ্রহে মরিয়া সারিতে থাকা লোকজন। ভিড় ঠেলে চাল নিয়ে বের হন পোশাকশ্রমিক আবেদুর রহমান (২৭)। ঘেমেনেয়ে একাকার তিনি। পরনের গেঞ্জি ঘামে জবজবে ভেজা। তিনি বলেন, ‘চালের জন্য এমন যুদ্ধ দেখি নাই। ভিড়ের কারণে দম বন্ধ হয়ে আসছিল। অপেক্ষা করছি তিন ঘণ্টার বেশি হয়েছে।’


বিটাক মোড়ে গতকাল ওএমএসের চালের ট্রাক আসে সকাল ১০টার দিকে। আর মানুষের অপেক্ষা আরও তিন থেকে চার ঘণ্টা আগে থেকে। চাল বিক্রেতারা জানান, ট্রাক এলেই চালের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েন লোকজন। সবাই প্রতিদিনের বরাদ্দের চাল শেষ হওয়ার আগেই চাল নিতে চান। ফলে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। দিন দিন মানুষ বাড়ার কারণে ভিড় সামাল দেওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ছে।


এক ঘণ্টা অপেক্ষার পর সোয়া ১১টার দিকে বিটাক এলাকায় দায়িত্বে থাকা খাদ্য পরিদর্শকের সহায়তায় চাল নিয়েছেন ৯০ বছর বয়সী ঝুনু দে। কথা হলে তিনি বলেন, চাল নিতে এমন অবস্থা আগে দেখেননি তিনি। ভিড়ের ধাক্কায় সারি থেকে সরে যান তিনি। পরে খাদ্য পরিদর্শকের সহায়তায় চাল পেয়েছেন।


ঝুনু দে বলেন, তিন ছেলের কেউই তাঁকে দেখেন না। স্বামীহারা মেয়ের ঘরে থাকেন তিনি। পাঁচ কেজি চাল পেলে ভাত খেতে পারবেন কয়েকটা দিন। তাই এই বয়সেও এত কষ্ট করে এসেছেন তিনি।


সারিতে দাঁড়ানো লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা আগেও ওএমএসের চাল কিনেছেন। গতকালের মতো বিশৃঙ্খলা আগে দেখেননি। গরম ও ভিড়ে ধাক্কাধাক্কি সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন কয়েকজন। দুপুর ১২টার দিকে ভিড় থেকে ছিটকে মিনতি দাশ (৪৫) নামের এক নারী চলে যান। তিনি জানান, তিনবার সারিতে দাঁড়িয়েছেন, ধাক্কাধাক্কিতে তিনবারই ছিটকে গেছেন তিনি। রোদের তেজ সহ্য করতে পারছেন না আর। তাই ফেরত যাচ্ছেন।
চাল বিক্রির ট্রাকের কর্মীরা জানান, সারিতে দাঁড়ানোর লোকজন হাতাহাতির পর্যায়ে পর্যন্ত চলে যান। সবাই আগে চাল পেতে চান। ভিড়ের ধাক্কাধাক্কির কারণে অনেক সময় বিক্রেতারাও আহত হন।


সারিতে দাঁড়িয়েছেন আড়াই মাস থেকে আড়াই বছরের শিশু কোলে থাকা অন্তত ১৫ জন নারী। তাঁদের মধ্যে সাতজন শেষ পর্যন্ত চাল পেয়েছেন। ভিড়ে বাচ্চার ক্ষতির কথা ভেবে চাল না নিয়ে ফিরে গেছেন অন্তত আটজন। বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী ও বাচ্চা কোলে থাকা নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা রয়েছে ওএমএসের ট্রাকে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us