অমর্ত্য সেনের 'ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা'

সমকাল অধ্যাপক আব্দুল বায়েস প্রকাশিত: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:০৫

পূজার ছুটিতে পাঠদান পর্ব শুরু হওয়ার আগে অমর্ত্য সেন শান্তিনিকেতনে পৌঁছলেন। যা হয় আর কি, ঘুরেফিরে ক্যাম্পাসের চারপাশ দেখা; বিশেষত খেলার মাঠ প্রদর্শন করে আপাতত সময় কাটানো। এক পর্যায়ে মামাতো ভাই বিরেনদা তাঁকে প্রশিক্ষণরত সমবয়সী শিশুদের ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেনের সঙ্গে পরিচয় করালেন। তাঁদের সঙ্গে প্রথম খেলার প্রচেষ্টা বিপর্যয় ঘটাল। তাঁর ব্যাটিং দক্ষতা পরখ করার জন্য ক্যাপ্টেন যখন তাঁর দিকে বল ছুড়লেন, অমর্ত্য সেনের ব্যাট থেকে আসা উত্তর সরাসরি গিয়ে ক্যাপ্টেনের নাকে আঘাত করলে বেশ রক্তপাত হয়। বিরেনদা যখন তাঁর সেবা করছিলেন, ক্যাপ্টেন তখন বলছেন, 'তোমার ভাই অবশ্যই আমার টিমে যোগ দিতে পারে। তবে তাকে বলো, সে যেন বোলারের নাক নিশানা না করে বাউন্ডারি নিশানা করে।'


অমর্ত্য তেমনটি প্রতিজ্ঞা করে নতুন স্কুলজীবনে প্রবেশ উদযাপন করলেন। অমর্ত্য সেন তাঁর আত্মজীবনীতে শুধু সেসব বিষয়েই স্মৃতিচারণ করেননি; যেসবে যুক্তিসংগতভাবে তিনি স্বস্তি বোধ করেছেন, অধিকন্তু যেসব ব্যাপারে তাঁর কোনো রকম 'দক্ষতা' ছিল না, তাও অকপটে স্বীকার করেছেন। তাঁর স্বেচ্ছাপ্রণোদিত এই স্বীকৃতি আগাগোড়া রসিকতার চাদরে আবৃত। এর একটি হচ্ছে ছুতারগিরি। ইংরেজিতে যাকে বলে কারপেনট্রি। শান্তিনিকেতনে প্রায়োগিক শিক্ষার সূত্রে সহপাঠীরা যখন প্রয়োজনমতো কাঠ বাঁকিয়ে সুন্দর সুন্দর ছোট নৌকা বানাতেন, তখন তিনি বড়জোর একটি পুরোনো দিনের সাবানদানি (সোপহোল্ডার) তাও দেখতে তেমন সুন্দর নয়; বানানোয় বেশি এগোতে পারতেন না। আরেকটা হলো, শান্তিনিকেতনের পাঠ্যসূচিতে থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গান। তিনি গান শুনতে ভালোবাসতেন। এখনও ভালো গানের প্রতি প্রচণ্ড আকর্ষণ বোধ করেন এবং শোনেন; কিন্তু নিজে একেবারেই গাইতে পারতেন না। তাঁর গানের শিক্ষক মোহরদি মোটেও মানতে রাজি ছিলেন না যে তাঁর কোনো ঘাটতি আছে এবং প্রথমদিকে ক্লাসে না আসার অজুহাত হিসেবে সেটি গ্রহণ করতে অনাগ্রহী ছিলেন। তিনি বলেছেন, 'গানের জন্য প্রত্যেকের একটা প্রতিভা আছে; বিকশিত করার জন্য এটা শুধুই অনুশীলনের ব্যাপার।'


মোহরদির তত্ত্বে তেজীয়ান হয়ে অমর্ত্য সেন বেশ কিছু আন্তরিক অনুশীলনও করলেন। তবে নিজের প্রচেষ্টার ব্যাপারে তিনি নিশ্চিন্ত থাকলেও এর ফলাফল নিয়ে খুবই ভাবিত ছিলেন। এক মাস অনুশীলনের পর মোহরদি আরেকবার তাঁর কৃতিত্ব পরীক্ষা করলেন। তারপর মুখে পরাজয়ের গ্লানি প্রকাশ করে অমর্ত্যকে বললেন, 'তোমার আর গানের ক্লাসে আসার দরকার নেই, অমর্ত্য।' অগত্যা অমর্ত্যের নিজের কাছে বলা, 'এই ভেবে অত্যন্ত আনন্দিত থাকলাম যে, নিজে না গেয়েও গান উপভোগ করা যায়।'


ক্রীড়াক্ষেত্রে কৃতিত্ব কম করুণাদায়ক নয়। শান্তিনিকেতন খেলাধুলার জন্য প্রচুর সময় দেওয়ার ব্যাপারে খুব উদার। ছেলেদের প্রিয় খেলা ফুটবলে কোনো দক্ষতা ছিল না। হকি স্টিক নিয়ে নড়ার জাদুও জানা ছিল না। ব্যাডমিন্টনে দক্ষতা পাস গ্রেড, তবে ক্রিকেটে রেকর্ড চলনসই- ব্যাটিংয়ে মোটামুটি কিন্তু বোলার নন; ফিল্ডিংয়ে জঘন্য।


সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us