সব খাবারেই নির্দিষ্ট সময় পর পচন ধরে। কোনও কোনও খাবারে জন্মায় ছত্রাক। ব্যতিক্রম হচ্ছে মধু। মধু ভালো রাখার জন্য ফ্রিজে সংরক্ষণের কোনও প্রয়োজন নেই। রুমের তাপমাত্রাতে রাখলেই বছরের পর বছর জুড়ে মধু থাকে টাটকা। ব্যাকটেরিয়া বা কোনও কিছুই নষ্ট করতে পারে না একে। মধুর পুষ্টিগুণও বজায় থাকে পুরোপুরি। এর কারণ কী?
বিবিসি সায়েন্স ফোকাস ম্যাগাজিন বলছে, একটি মুখবন্ধ বয়ামে হাজার বছর পর্যন্তও ভালো থাকতে পারে মধু! মধুর এই শক্তিশালী জীবনীশক্তির পেছনে মূল হাত রয়েছে স্বয়ং এর কারিগর মৌমাছির। নেকটার তৈরি করার সময় গ্লুকোনিক অ্যাসিডের ক্ষরণ বেড়ে যায়। মৌমাছি নেকটারে গ্লুকোজ অক্সাইড নামের এক বিশেষ ধরনের এনজাইমের ক্ষরণ করে। এই কারণে মধুতে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড তৈরি হয়। এই উপাদানটাই মধুর মধ্যে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান হিসেবে কাজ করে।
মধুতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান। এতে সুক্রোজের পরিমাণও বেশি থাকে। তবে পানির পরিমাণ থাকে নামমাত্র। এই কারণেই মধুকে হাইগ্রোস্কোকিপ বলা হয়। মধু সহজে শুকিয়ে যায় না। বাইরের কোনও জীবাণুও মধুর সংস্পর্শে আসে না এবং সংক্রমণ ছড়ায় না। ফলে মধুতে কোনও জীবাণু সংক্রমণ হয় না। এই কারণে মধু নষ্ট হয় না। তাছাড়া মধু প্রাকৃতিকভাবেই অ্যাসিডিক। নষ্ট না হওয়ার পেছনে এটাও একটা কারণ। মধুতে বেশ ভালো পরিমাণে গ্লুকোনিক অ্যাসিড থাকে। এই অ্যাসিড মধুর মধ্যে ব্যাকটেরিয়াকে বৃদ্ধি হতে দেয় না।
জেনে নিন
কাচের মুখবন্ধ বয়ামে সংরক্ষণ করুন মধু। সরাসরি রোদ পড়ে এমন স্থানে মধুর বয়াম রাখবেন না। মধু কখনোই ফ্রিজে রাখবেন না। মধুর বয়ামে বাতাস যেন না ঢোকে সেদিকে লক্ষ রাখবেন।