প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ, বক্তব্য, সাক্ষাৎকার, বিরোধীদের প্রতি শানিত আক্রমণ এবং বুদ্ধিদীপ্ত রসবোধের সমৃদ্ধতা আমাকে মুগ্ধ করে। এজন্য আমি আগ্রহ সহকারে এগুলো শুনি, পত্রিকায় পড়ি এবং কোনো কোনোটি একাধিকবারও শুনি এবং পড়ি। তার বলার একটা ভিন্ন স্টাইলও আছে-কোনো জাতীয় অনুষ্ঠানে কীভাবে উপস্থাপন করতে হবে, তাতেও তিনি বেশ দক্ষ ও পটু। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে তিনি যেমন রসবোধের মাধ্যমে তার বক্তব্যকে প্রাণবন্ত করে তোলেন, তেমনি আবার ধর্মসম্পর্কিত অনুষ্ঠানে তিনি বেশ গুরুগম্ভীর এবং ধীরস্থির-শান্তভাবে তার বক্তব্যকে শ্রোতাদের হৃদয়গ্রাহী করে তোলায় সচেষ্ট থাকেন। কিন্তু বিরোধী দল, বিশেষত বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ যখন তার আক্রমণের আওতায় এসে যায়, তখন যেন এক মহাপ্রলয় ঘটিয়ে দেন।
তখন তার চেহারায় কাঠিন্য এবং গলার আওয়াজের ধার আমরা দেখি এবং অনুধাবন করি। মোটের ওপর তার ভাষণ, বক্তব্য সাক্ষাৎকার বিষয়ভিত্তিক আমেজে ঋদ্ধ হয়। মনে পড়ে, যানজটের এক মহাফ্যাসাদে পড়ে আমি ঠিক সময়ে টেলিভিশনের সামনে হাজির হয়ে তার বিদেশ ফিরতি এক সংবাদ সম্মেলন দেখার জন্য বাস থেকে নেমে সিএনজিতে পাঁচশত টাকা গচ্চাও দিয়েছিলাম। এমন দুর্নিবার এক আকর্ষণ নিয়েই একেকটি ঘটনার পর এখন টের পাই শেখ হাসিনা এখন ঝানু রাজনীতিকে পরিণত হয়েছেন। প্রথমবার প্রধানমন্ত্রীর শপথ গ্রহণের পর সাংবাদিকের কতদিন রাজনীতিতে থাকবেন, এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ৫৭ বছরে উপনীত হওয়ার একটা কথা বলেছিলেন। তখন তার উত্তরে তার স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়াও কিছুটা প্রমোটরের ভূমিকার সহায়তা করেছিলেন মর্মে আমরা টেলিভিশনে দেখেছিলাম। সুদীর্ঘ ১৯ বছর প্রধানমন্ত্রিত্বে থেকে এখন হেন বিষয় নেই যেটাতে তিনি পাণ্ডিত্য রাখেন না। অবস্থাদৃষ্টে আপাতত আমরা আগামী মেয়াদেও তিনিই যে আবার প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন, ইনশাল্লাহ তাতে কোনো ধরনের সন্দেহের অবকাশ দেখছি না। ফলে তার প্রধানমন্ত্রিত্ব হয়ে যাবে ২৫ বছর এবং একাধারে হবে চার মেয়াদ অর্থাৎ ২০ বছর-এ আশা আমরা করতেই পারি।