প্রযুক্তিপণ্যের ধ্বংসাত্মক দাপট!

বণিক বার্তা ড. মো. আব্দুল হামিদ প্রকাশিত: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০২:২৩

অনেক দিন আগের কথা। ট্রেনে টিটিই টিকিট চেক করছেন। কারো টিকিট না থাকলে তাকে বড় জরিমানা করছেন। এ অবস্থা দেখে এক ধূর্ত লোক পকেট থেকে এক ডাকটিকিট বের করে থুথু দিয়ে সেটা নিজের কপালে লাগিয়ে নিলেন। বাবু এসে টিকিট চাইলে কপালের দিকে ইঙ্গিত করলেন। তখন টিকিট চেকার বললেন, এটা তো চিঠি যাওয়ার টিকিট! এটা দিয়ে আমি কী করব? 


তখন সেই যাত্রী খুব জ্ঞানীর মতো ভাব করে বলল, এ টিকিটে একটা চিঠি যদি দেশের একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যেতে পারে তাহলে আমি কেন মাত্র দুটো স্টেশন যেতে পারব না? এমন লোককে কীভাবে শিক্ষা দেয়া যায় তা ভাবতে ভাবতে টিটিই পাশের জনের কাছে টিকিট চাইল। সে খুব বিনয়ের সঙ্গে বলল—বাবু আমি বেয়ারিং (অর্থাৎ চিঠি গ্রহণকারী ডাকমাশুল পরিশোধ করবে)! 


এমন পরিস্থিতিতে টিটিই পা থেকে জুতা খুলে সেটার গোড়ালি দিয়ে ওই দুই যাত্রীর কপালে জোরে জোরে কয়েক ঘা লাগিয়ে দিলেন! তারা তখন চীৎকার করে বলতে থাকলো—বাবু করেন কী, করেন কী? তিনি খুব শান্তভাবে বললেন, পোস্ট অফিসের সিল না দিলে চিঠি যাবে কেমন করে? তাই তোমাদের সিল মেরে দিলাম! একেই বুঝি বলে, যেমন বুনো ওল তেমনি বাঘা তেঁতুল! 


শিরোনামের সঙ্গে গল্প মিলছে না, তাই তো? আসলে আমার প্রশ্নটা অন্যখানে। সেটা হলো—এ গল্প পড়ে আপনি যেমন মজা পেলেন, এখনকার কোনো কিশোরও কি সেটা পাবে? অবশ্যই না। কারণ চিঠি, ডাকটিকিট, বেয়ারিং এ শব্দগুলো তাদের কাছে প্রায় অপরিচিত। কিন্তু আমাদের শৈশবে এগুলো ছিল হরহামেশা শোনা ও জানা বিষয়। একেকটা চিঠি লেখা ও পড়ার যে গভীরতা ছিল তা এখন ভাষায় বর্ণনা করা প্রায় অসম্ভব। তাহলে কে মাত্র এক প্রজন্মের ব্যবধানে এ বিষয়গুলোকে ‘অচল’ করে ফেলল? 


আসলে শিল্পের (ইন্ডাস্ট্রির) যতগুলো বৈশিষ্ট্য আছে তাদের অন্যতম হলো ধ্বংসাত্মক সৃষ্টি! অর্থাৎ নতুন কিছু সৃষ্টির মাধ্যমে জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে আমরা অনেক কিছু ধ্বংসও করে ফেলি। বোঝার সুবিধার্থে বর্তমানে আধুনিক জীবনের অপরিহার্য উপাদান স্মার্টফোনের কথাই ধরি। এ বস্তুটা যতই উন্নত হচ্ছে আমাদের চারপাশের অসংখ্য শিল্পকে ততই তছনছ করে ফেলছে! যাদের বয়স চল্লিশের কাছাকাছি বা তারও বেশি তারা পার্থক্যটা খুব ভালো ধরতে পারবেন। 


তাহলে যার বস্তুগত খাত ধ্বংস করার ক্ষমতা এত বেশি তা কি ব্যক্তির জন্য শুধুই কল্যাণকর? অনেকের মতে, এ বস্তুটির মানুষের ক্ষতি করার ক্ষমতা আরো বহুগুণ বেশি। এত শক্তিশালী বস্তু এখন সবার হাতে হাতে—শিশু-বৃদ্ধ, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, গ্রাম-শহরে বাস করা ব্যক্তি নির্বিচারে। ফলে তা থেকে এর ব্যবহারকারী সমৃদ্ধ হবে নাকি ক্ষতিগ্রস্ত তার পুরোটাই নির্ভর করছে এর ব্যবহারের ধরনের ওপর।


এরই মধ্যে তথাকথিত স্মার্টফোন বিপুলসংখ্যক মানুষের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে (ধ্যান-জ্ঞান-সাধনার বস্তুতে) পরিণত হয়েছে। আশপাশের মানুষ, চলমান মিটিং, নাওয়া-খাওয়া-ঘুম সবকিছুর থেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে হাতের ওই যন্ত্রটি। কিন্তু যদি প্রশ্ন করা হয়, তা থেকে ঠিক কী অর্জনের জন্য এত নিবিড় মনোযোগ? 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us