তুরস্কে ১৮৯৪ সালে এক ভূমিকম্প হয়। সেই ভূমিকম্পে ধসে পড়ে দেশটির দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলীয় শহর মালাতিয়ায় অবস্থিত হাজি ইউসেফ মসজিদ। মসজিদটি নানা কারণে ঐতিহাসিক একটি স্থাপনা। ভূমিকম্পে ধসে যাওয়ার পর তখনকার কর্তৃপক্ষ মসজিটি পুনর্নির্মাণ করে। এরপরে ১৯৬৪ সালে আরেকটি ভূমিকম্পে মসজিদটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে আবারও মেরামত করা হয়। গতকাল সোমবার ভোরে তুরস্ক ও সিরিয়ায় আঘাত হানা ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে আবার মসজিদটি ধসে পড়েছে।
গত বছর ওই মসজিদে নামাজ আদায় করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, ভূমিকম্পে মসজিদটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর বেশির ভাগ গম্বুজ, মিনার ও দেয়াল ধসে পড়েছে। বিশেষ করে মসজিদের একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবচেয়ে বেশি।
১৮৯৪ সালের ৫ মার্চের ভূমিকম্পে হাজি ইউসেফ মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন তুরস্ক ছিল অটোমান সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। তখন অটোমান সুলতান ছিলেন দ্বিতীয় আবদুল হামিদ। তাঁর নির্দেশে ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদটির পুনর্নির্মাণ শুরু হয়। তাই এর কৃতিত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। মসজিদটি পুনর্নির্মাণে দেশটির মানুষও সাহায্য করেছিলেন।
তবে ১৮৯৪ সালের ভূমিকম্পের চেয়ে ১৯৬৪ মালের ১৪ মার্চের ভূমিকম্পে মসজিদটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ওই ভূমিকম্পে মসজিদটির অনেকগুলো গম্বুজ ও দেয়ালে ফাটল ধরে। মিনারগুলো ধসে পড়ে। এরপর দেশটির স্থাপনা বিভাগ এর মেরামত করে আবারও বড় মিনার ও গম্বুজগুলো সেখানে স্থাপন করেছিল।
সোমবারের ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহত মানুষের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। শুধু তুরস্কেই ৩ হাজার ৪১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর সিরিয়ার সরকার ও বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোয় ভূমিকম্পে মারা গেছেন ১ হাজার ৬০২ জন। ভূমিকম্পে দুই দেশ মিলে নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ৫ হাজার ২১ জনে দাঁড়িয়েছে।