সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ভের পাশের স্টলগুলোতে ঘুরে ঘুরে বই দেখছিলেন জান্নাতুন নাঈমা। ঝুমঝুমি প্রকাশনীর দিকে তাকিয়ে হঠাৎ থেমে গেলেন তিনি। একটু এগিয়ে স্টলটিতে সাজানো বইগুলোর মধ্য থেকে তুলে নিলেন কবি নির্মলেন্দু গুণের নতুন কাব্যগ্রন্থ 'সূর্যটা হেলে পড়েছে'। এ সময় সূর্যটা সত্যি হেলে পড়েছে। সন্ধ্যা নামার মুখে কথা হয় জান্নাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ভিড় এড়াতে শুক্র ও শনিবার আসা হয়নি। অনেক নতুন বই এসেছে। স্টলে ঘুরে ঘুরে সেগুলো দেখছেন। পছন্দের লেখকের বই পেলে সংগ্রহ করছেন।
গতকাল রোববার অমর একুশে বইমেলার পঞ্চম দিনে নতুন ৭৩টি বই এসেছে। দ্বিতীয় দিন থেকে এ পর্যন্ত এসেছে মোট ৩০৩টি নতুন বই। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি শেষে গতকালও দর্শক-ক্রেতা ও লেখক-পাঠকের পদচারণায় মুখর ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। দুপুরের পর থেকে ভিড় বাড়তে থাকে। এমন লোকসমাগমে লেখক ও প্রকাশকরা বেশ খুশি।
বিকেলে মেলা প্রাঙ্গণে দেখা হয় কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনের সঙ্গে। এ বছর অনন্যা প্রকাশনী থেকে তাঁর আত্মজীবনী 'যে জীবন আমার ছিল' প্রকাশ হয়েছে। অনন্যার স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, লেখালেখির বয়স ৫০ বছর হলো। তাই ভাবলাম, আত্মজীবনী প্রকাশ করা যাক। লেখালেখি করতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়েছে, সেগুলোই এই বইয়ে সংকলিত হয়েছে।
এবারের মেলা সম্পর্কে তিনি বলেন, শুরু থেকেই যে সমাগম দেখা যাচ্ছে, তাতে ভালোই লাগছে। তবে মনে হচ্ছে, স্টলগুলো একদম গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে আছে। মাঝে আরেকটু জায়গা থাকলে সুন্দর হতো।
বাংলা প্রকাশনীর কর্মকর্তা নুরুন নবী বলেন, দুই ছুটির দিনে বিক্রি অনেক ভালো হয়েছে। গতকালও অনেক পাঠক এসেছেন, বই কিনেছেন।
শিশুকন্যাকে নিয়ে মেলায় প্রবেশের জন্য ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের দিকে আসেন তানভীর হোসাইন। কিন্তু ফটকটি বন্ধ থাকায় ঘুরে চলে যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, এই ফটক খোলা থাকলে এখানে গাড়ি পার্কিং করে মেলায় ঢোকা যায়। টিএসসি প্রান্তে পার্কিংয়ের সুযোগ নেই। এখন শাহবাগ ঘুরে মেলায় প্রবেশ করতে হবে।
আগামী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ওসমান গণি বলেন, মেলায় শুধু দর্শনার্থী-পাঠকের ভিড় লক্ষ্য করার মতো। শুরু থেকেই বই বিক্রি ভালো। তবে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের দিকের ফটকটি বন্ধ থাকায় অনেকে ভোগান্তিতে পড়ছেন। ফটকটি বন্ধ রাখা ঠিক হয়নি।