হকিতে আন্তর্জাতিক সাফল্য আসছে, কিন্তু সেটি মূলত বিকেএসপির খেলোয়াড়দের হাত ধরে। বাংলাদেশের ঘরোয়া হকি মানে শুধুই হতাশার গল্প। কোথায় আটকে গেল হকি?
টেলিভিশনে আফিফ হোসেনকে দেখলে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন কাজী রাইয়ান রহমান। জাতীয় দলের ক্রিকেটার আফিফ যখন বিপিএলে খেলেন, রাইয়ান নিজের শাড়ি-কাপড়ের দোকানে ব্যস্ত ক্রেতাদের সঙ্গে দর-কষাকষিতে। অথচ বিকেএসপিতে একই ব্যাচে ভর্তি হয়েছিলেন দুজন। ক্রিকেটার আফিফ আর হকি খেলোয়াড় রাইয়ানের বন্ধুত্ব এখনো অটুট। কিন্তু আফিফের পরিচিতি দেশের বাইরে বিস্তৃত হলেও হকিস্টিক তুলে রেখে রাইয়ান ধরেছেন ব্যবসা।
সর্বশেষ ২০১৮ সালে প্রথম বিভাগের দল শান্তিনগর ক্লাবের হয়ে খেলেছেন। হকি অনিয়মিত হওয়ায় খেলা ছেড়ে দেওয়া এই তরুণ বলছিলেন, ‘জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার পর নতুন করে কিছু শুরু করা কঠিন। তবু ব্যবসার চেষ্টা করছি। সবকিছু নিয়মিত হলে খেলাটা ছাড়তাম না।’
ফেডারেশনের পরিকল্পনাহীনতায় একটা প্রজন্ম যেন খেলাটা থেকেই হারিয়ে যেতে বসেছে। হাতে গোনা কিছু খেলোয়াড় বিভিন্ন বাহিনীতে চাকরি করছেন। বাকিরা ভুগছেন হতাশায়।
প্রায় ১৪ বছর জাতীয় দলে খেলা গোলরক্ষক জাহিদ হোসেন তিন বছর নেতৃত্বও দিয়েছেন জাতীয় দলকে। মাঠে নিয়মিত খেলা না থাকায় সাভারের বাইপাইলে জুতার ব্যবসা শুরু করেছিলেন। টাকাপয়সার অভাবে সেটাও চলেনি। গত অক্টোবরে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলে সামান্য কিছু উপার্জন করলেও এখন অনিশ্চয়তা প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে। স্ত্রীর আয়েই চলছে সংসার। ‘সংসারে যেভাবে টাকাপয়সা দেওয়া দরকার, সেভাবে দিতে পারি না। অথচ আমি জাতীয় দলে খেলেছি, অধিনায়কও ছিলাম!’—বলছিলেন হতাশ জাহিদ।