সাম্প্রতিক সময়ে টেক জায়ান্টগুলো নতুন প্রযুক্তির বদলে বেশি শিরোনাম হয়েছে কর্মী ছাঁটাইয়ের খবরে। গত বছর ৭০ হাজারেরও বেশি কর্মী ছাঁটাই করেছে গুগল, আমাজন, মাইক্রোসফট, মেটার মতো প্রতিষ্ঠানগুলো।
মহামারির সময় বিপুলসংখ্যক কর্মী নিয়োগ করলেও সম্প্রতি গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট ১২ হাজার, আমাজন ১৮ হাজার, মেটা ১১ হাজার, টুইটার ৪ হাজার ও মাইক্রোসফট ১০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে।
দ্য ভার্জের প্রতিবেদন অনুযায়ী, টেসলা, নেটফ্লিক্স, রবিন হুড, স্ন্যাপ, কয়েনবেস এবং স্পটিফাইয়ের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোও কর্মী ছাঁটাইয়ের খাতায় নাম লিখিয়েছে। তবে টেক জায়ান্টদের তুলনায় সে সংখ্যা বেশ কম। গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, টেক জায়ান্টগুলোতে এতো ছাঁটাইয়ের কোনো নির্দিষ্ট কারণ দেখানো হয়নি। সাধারণত বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলো কর্মী ছাঁটাই করে যখন বিজ্ঞাপনের পরিমাণ কমে আসে বা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো পণ্যের অর্ডার কমে আসলে তাঁদের কর্মী ছাঁটাই করে। তবে এমন নির্দিষ্ট কোনো কারণ দেখায়নি গুগল, মেটার মতো প্রতিষ্ঠানগুলো।
অবধারিতভাবে এই ছাঁটাইয়ের প্রভাব পড়ছে কনসালট্যান্ট, বিপণন, বিজ্ঞাপন এবং উৎপাদন খাতে। কারণ, প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয় কমিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দিকে ঝুঁকছে।
কেন হচ্ছে এ ছাঁটাই?
করোনা মহামারির সময় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয়ের পরিমাণ বাড়ে টেক জায়ান্টগুলোর। এ সময়ে গ্রাহকেরা সাধারণের চেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছেন অনলাইনে। ফলে বিজ্ঞাপনের পরিমাণও বাড়ায় বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠানগুলি। তবে মহামারি পরবর্তী সময়ে বিজ্ঞাপনের পরিমাণ কমে আসে প্ল্যাটফর্মগুলোতে, যার কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাঁটাই হবে-এটা অনুমেয় ছিল। তবে ছাঁটাই এর জোয়ারে ব্যতিক্রম ছিল অ্যাপল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রিতভাবে কর্মী নিয়োগ করেছে। যার ফলে কর্মী ছাঁটাইয়ের দিকেও মনোযোগ দিতে হয়নি অ্যাপলকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, টেক জায়ান্টগুলো করোনা মহামারির প্রবৃদ্ধিকে স্থায়ী বলে ধরে নিয়ে ওই অনুপাতে কর্মী নিয়োগ ও বিভিন্ন নতুন প্রকল্পের বিনিয়োগ করা শুরু করেছিল। ফলে, মহামারির পরবর্তী সময়ে আয় কমে আসায় কর্মী ছাঁটাইয়ে বাধ্য হচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।